|
|
|
|
সালিশিসভা ঘিরে সংঘর্ষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
সালিশি সভা ঘিরে সংঘর্ষের জেরে এক মহিলা-সহ জখম হলেন দু’জন। রবিবার রাতে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার বড় কাশীপুর গ্রামে। সংঘর্ষের সময়ে উত্তেজিত বাসিন্দাদের একাংশ একটি বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। জখমদের বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরানো বিবাদকে কেন্দ্র করে এক পরিবারের সঙ্গে একাংশ গ্রামবাসীর গোলমালের জেরে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’পক্ষের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় এলাকার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ জানুয়ারি মাসে গ্রামের স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ক্রিকেট খেলাকে ঘিরে গোলমাল হয়। |
|
গ্রামের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র রিপন চৌধুরীকে শিকল দিয়ে বেঁধে প্রচন্ড মারধরের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী মন্টু সরকারের বিরুদ্ধে। রিপনকে গুরুতর জখম অবস্থায় বালুরঘাট থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর কয়েকদিন আগে রিপন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও তার দুটি কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে আত্মীয়দের অভিযোগ। রিপনের বাবা বিশ্বজিত চৌধুরী বালুরঘাট থানায় মন্টু সরকার-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি গ্রামেও সালিশি সভা ডাকা হয়। সেই সভায় অভিযুক্তরা হাজির না হওয়ায় গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সে সময় পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত মন্টুবাবুদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। গ্রেফতার এড়াতে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। এর পর দু’মাস কেটে গেলেও পুলিশ কাউকে ধরতে না পারায় রিপনের পরিবার বালুরঘাট থানার বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ জানিয়ে সুপারের দ্বারস্থ হন। কয়েকদিন আগে আদালত থেকে জামিন নিয়ে অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন গ্রামে ফেরেন। তার পরেও রবিবার রাত ৮টা নাগাদ গ্রামে ফের সালিশি সভা ডাকা হয়। প্রায় একঘন্টা কেটে গেলেও অভিযুক্তদের তরফে হাজির না-হওয়ায় সালিশি সভা থেকে কয়েক জন তাঁদের ডাকতে যান। অভিযোগ, অভিযুক্তের পরিবার ওই মহিলাদের উপরে হামলা করে। হামলায় এক মহিলা গুরুতর জখম হন। ইটের আঘাতে জখম হন দুজন। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। রাত ১১টা পর্যন্ত গোলমালের জেরে দুটি খড়ের গাদাও আগুনে পুড়ে ছাই হয়। উত্তেজিত জনতার বাধায় অনেক রাতে দমকল আগুন আয়ত্বে আনতে সক্ষম হয়। এদিন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় থমথমে পরিবেশ। গ্রেফতারের ভয়ে অধিকাংশ পুরুষ ঘর ছাড়া। অভিযুক্ত পরিবারের সদস্য ববিতা সরকার অভিযোগ করেন, “গ্রামের কিছু মানুষ উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বাড়ি ভাঙচূর করে আগুন লাগিয়েছে। পুলিশ ও দমকলকে গ্রামে ঢুকতে তারা বাধা দিয়েছেন।” অন্যদিকে, বিশ্বজিতবাবু অভিযোগ করেন, “ওদের মারে ছেলেটা অসুস্থ হয়ে গিয়েছে। অথচ অভিযু্ক্তরা এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরেনি। পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার না পেয়ে সালিশির দ্বারস্থ হই। তাতেও অভিযুক্তরা হামলা চালানোয় গ্রামবাসীরা মেনে নিতে পারেননি।” |
|
|
|
|
|