পক্ষপাতের অভিযোগ কংগ্রেসের |
শিলিগুড়ি, শিবমন্দির, বিধাননগর-সহ ৪টি এলাকায় পথ অবরোধ করা হয়। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের নেতৃত্বে ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগির কার্যালয়ে গিয়ে আচমকা অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ ছাত্র পরিষদ দখল করায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ভয় দেখাতে চাইছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর নির্দেশেই অসুস্থ রোনাল্ডকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার করে লক-আপে রাখা হয়। এ হেন পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে আমরা লাগাতার আন্দোলন করব।” আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মহকুমায় ছাত্র ধর্মঘট ডেকেছে ছাত্র পরিষদ। পাশাপাশি, রোনাল্ডকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ছাত্র পরিষদ জানিয়েছে, নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রোনাল্ড সেখানে অনশন শুরু করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “শঙ্করবাবুর অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশ আইন মেনে কাজ করেছে। আমি পুলিশের কাজে কখনও হস্তক্ষেপ করিনি। করবও না। তবে আমি মনে করি, কেউ অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করলে তা পুলিশের কড়া হাতে ঠেকানো উচিত।” এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, একই মারপিটের ঘটনায় পুলিশ দু’রকম মামলা করল কেন? ছাত্র পরিষদের নেতাদের একাংশের অভিযোগ, ‘রায়গঞ্জে বেল ও মাজদিয়ায় জেল’-এর ট্রাডিশন যে গোটা রাজ্যেই চলছে শিলিগুড়ির ঘটনায় ফের তা স্পষ্ট হয়ে গেল। তবে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “উভয়পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়েছে। এক পক্ষ খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। সেই মতো মামলা করে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য পক্ষ শুধু মারধরের অভিযোগ করেছেন। সেই অনুযায়ী মামলা দায়ের করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য হাসপাতালে যাওয়া হয়। অসুস্থতা বেশি থাকায় তাঁকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শীঘ্রই তাঁকেও গ্রেফতার করা হবে।” ঠিক কী ঘটেছিল? ছাত্র পরিষদ জানাচ্ছে, ক’দিন আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ৮০টির মধ্যে ১টি আসন পেয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। আগামী ৩০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। আগামীকাল, মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা করার দিন। তার আগে রবিবার প্রস্তুতি দেখতে রোনাল্ড আইন বিভাগে যান। তিনি ফেরার সময়ে ৩ নম্বর গেটের সামনে গোলমাল বাধে। ওই এলাকাতেই বাড়ি টিএমসিপি নেতা পঙ্কজের। লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষের পরে রোনাল্ড ও পঙ্কজ উভয়েই জখম হন। পর্যায়ক্রমে দুজনেই থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরে হাসপাতালে ভর্তি হন। টিএমসিপি নেতা পঙ্কজের অভিযোগ, “রোনাল্ড ও তাঁর দলবল আমাকে খুন করার চেষ্টা করে। তাই পুলিশকে জানিয়েছি।” পক্ষান্তরে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে রোনাল্ড জানান, পঙ্কজরা তাঁর উপরে লাঠি নিয়ে চড়াও হয়ে মারধর করেছেন। |