স্কুলের গা ঘেঁষে জাতীয় সড়ক, উৎকণ্ঠা গ্রামে
স্কুলের গা ঘেঁষে বহরে বাড়ছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক! এতে নবগ্রামের মহলো হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার প্রশ্নে চিন্তিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও।
উত্তর ২৪ পরগণার বারাসতের আমডাঙা থেকে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা পর্যন্ত প্রায় ৪২১ কিমি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের মাঝামাঝি থেকে। নিয়ম মতো জাতীয় সড়কের ক্ষেত্রে দু’পাশে অন্তত দেড় মিটার থেকে তিন মিটার জায়গা ছেড়ে রাখতে হয়। কিন্তু এই স্কুলটি জাতীয় সড়কের এতটাই গা ঘেঁসে রয়েছে যে, সেই দূরত্ব বজায় থাকছে না। সে কথা স্বীকার করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ ডিভিশনের প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লা। তিনি বলেন, “জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু আগেই যে কোনও নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে নিয়ম অনুযায়ী রাস্তার দু-ধারে দেড় মিটার করে তিন মিটার জায়গা ছেড়ে রাখার কথা থাকলেও জমি সমস্যার কারণে এই স্কুলটির ক্ষেত্রে তা সম্ভব হচ্ছে না।”
নিজস্ব চিত্র।
তা হলে উপায়? হরিজন অধ্যুষিত গ্রাম মহলোতে প্রায় চার কাঠা জায়গা জুড়ে ১৯৬৫ সালে ওই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৫০ শতাংশ হরিজন সম্প্রদায়ের এবং তার মধ্যে ৭০ শতাংশ তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। স্কুলে বর্তমানে ১০১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। গ্রামবাসী আনারুল হক বলেন, “স্কুলের গা ঘেঁষে রাস্তা বানানোর ফলে আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রাণ সংশয় হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা কিছুতেই তা মানব না। প্রয়োজনে স্কুল ভবন অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” গ্রামের মানুষের বক্তব্য, সেক্ষেত্রে বর্তমান স্কুল ভবনটি ভেঙে অন্যত্র স্কুল ভবন তৈরি করতে হবে। স্কুল অধিগ্রহণের কথা জানিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কর্তৃপক্ষ ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে জেলাপ্রশাসনের কাছে চিঠিও পাঠায়। কিন্তু বছর খানেক আগে পাঠানো ওই চিঠির এখনও কোনও উত্তর মেলেনি। এই অবস্থায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে পাথর ফেলতে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে বাধা পায় ঠিকাদার সংস্থার লোকজন। প্রধানশিক্ষক মুকুল দে বলেন, “স্কুল ভবনের গা ঘেঁষে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারিত হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দিন স্কুল যাতায়াত করতে হবে। এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিকে চিঠি দিই।” কিন্তু কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি। ওই সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ গত ১৯ ডিসেম্বর বর্তমান সভাপতির কাছেও বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দেয়। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। গ্রামবাসীরা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গেও দেখা করেন। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আবদুর রউফ বলেন, “পূর্ব-পশ্চিমে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা থাকলেও জাতীয় সড়কের দিকে রয়েছে তিনটে ঘর। তার মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি ক্লাসঘরও রয়েছে। এছাড়া স্কুলের উত্তর দিকে দোতলা ভবন রয়েছে। আপাতত সেখানে ক্লাস করার কথা জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলাপ্রশাসন থেকে বিভিন্ন দফতরে নতুন করে চিঠি পাঠানো হবে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা সাগির হোসেন বলেন, “উন্নয়নের জন্য রাস্তা দরকার। এর পাশাপাশি খুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার বিষয়টিও চিন্তা করতে হচ্ছে। ফলে স্কুল ভবন অধিগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে জেলাপ্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের অর্থ দিয়ে নতুন জমি কিনে ভবন নির্মাণ করা হবে।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মহম্মদ সইফুল্লা বলেন, “স্কুল অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কোনও চিঠি মুর্শিদাবাদ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ বা জেলাপ্রশাসনের কাছ থেকে পাইনি। ওই চিঠি পেলে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.