তৃণমূল বিধায়কের মৃত্যুতে শোকের ছায়া জেলা জুড়ে
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন দাসপুরের তৃণমূল বিধায়ক অজিত ভুঁইয়া (৫৮)। বন্যায় বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় পরিবারকে নিয়ে দাসপুর-১ ব্লকের নাড়াজোল পঞ্চায়েতের কিসমত নাড়াজোল গ্রামে তৃণমূল কার্যালয়ে থাকতেন তিনি। রবিবার বেলদায় দলীয় কর্মী সম্মেলন সেরে সেখানে ফেরেন। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ আচমকাই

প্রয়াত অজিত ভুঁইয়া।
বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়। সঙ্গে কাশি। ভর্তি করা হয় নাড়াজোল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করানো হয়। সোমবার ভোরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এ দিন সকালে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই দাসপুর-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি চেনা-পরিচিত-আত্মীয়-স্বজনেরাও শোকে মূহ্যমান। দুপুর দু’টো নাগাদ অজিতবাবুর দেহ পৌঁছয় দাসপুরের সোনাখালিতে। আড়াইটে নাগাদ দাসপুরে দলীয় কার্যালয় এবং দাসপুর-১ পঞ্চায়েত অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় মরদেহ। সেখানে ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান আধিকারী থেকে শুরু করে সিপিএম নেতা সুনীল অধিকারীসমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনেরা উপস্থিত ছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। সাড়ে ৩টে নাগাদ দলীয় কার্যালয়ে তাঁর শেষ ঠিকানায় দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্রোপাধ্যায়, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র-সহ জেলার কয়েক হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। পার্থবাবু বলেন, “দলের সম্পদ ছিলেন অজিত ভুঁইয়া। তাঁর মৃত্যুতে দলের খুবই ক্ষতি হল।”
সোমবার বিধানসভা চত্বরে প্রয়াত বিধায়কের দেহ আনার
পরে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের শ্রদ্ধার্ঘ্য।
১৯৫৪ সালে দাসপুর থানার হরিরাজপুর সংলগ্ন কিসমত নাড়াজোলে জন্ম হয় অজিতবাবুর। বাবা কালিপদ ভুঁইয়া এবং মা শেফালি ভুঁইয়া আগেই প্রয়াত হয়েছেন। তিন ভাই-দুই বোনের মধ্যে অজিতবাবু মেজ সন্তান। নাড়াজোল হাইস্কুলে পড়াশোনা। উচ্চমাধ্যমিকের সময় রজনী দোলয়ের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা। বরাবরই তিনি ডানপন্থী ছিলেন। প্রথমে কংগ্রেস করলেও ১৯৯৮ সালে জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং সুবক্তা হিসাবে এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল ভালই। ২০০১ এবং ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে দাসপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। মাঝে ২০০৬ সালে বিধানসভা নিবার্চনে অবশ্য সিপিএম প্রার্থী সুনীল অধিকারীর কাছে হেরে যান। তবে, দলের খুব দুর্দিনেও তিনি তৃণমূল ছেড়ে যাননি। ২০০৪ সাল থেকে দীর্ঘ দিন তিনি জেলার তৃণমূল সভাপতি ছিলেন।
বিধায়ককে দাসপুরে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড়।
মাত্র বিঘা দেড়েক জমি ছাড়া আর কোনও সম্বল ছিল না অজিতবাবুর। চেয়ে-চিন্তেই চলত সংসার। স্ত্রী মমতা ভুঁইয়া, ছেলে কুমারেশ ও মেয়ে মঞ্জুশ্রী প্রতি পদে পাশে থেকে মনোবল জুগিয়েছেন। ছেলে কুমারেশ কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ পেয়েছেন। বিবাহিতা মেয়ে মঞ্জুশ্রী স্থানীয় একটি স্কুলের প্যারাটিচার। দলে এবং পরিবারে সবে সুসময় ফিরছিল। বিধায়কের অকালমৃত্যুতে শোকের ছায়া ঢেকে দিল সব।

— নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.