ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে ‘ভূমিকা’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার, মুক্তি যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ১২৯ জন বিশিষ্ট বিদেশিকে ‘ফ্রেন্ড অফ বাংলাদেশ’ সম্মানে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মানিক সরকারকে। ২৭ মার্চ ঢাকার এই অনুষ্ঠানে মানিকবাবু যোগ দেবেন, এটা ঠিকই হয়ে আছে।
কিন্তু রাজ্য-রাজনীতিতে বিরোধী কংগ্রেস ছাড়াও সিপিএমের প্রাক্তনীরাও মানিকবাবু কিংবা তাঁর দল সিপিএমের সেই সময়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করায় অস্বস্তিতে পড়েছেন মানিকবাবুর দল সিপিএম। দলের পক্ষ থেকে এক বিবিৃতিতে বলা হয়েছে, মুক্তি যুদ্ধের সময় মানিকবাবু ত্রিপুরা রাজ্য এসএফআইয়ের সম্পাদক ছিলেন। এসএফআই সেই সময় মুক্তি যুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। দলের এই বক্তব্যকে খারিজ করে দিয়েছেন দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ অজয় বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, মানিকবাবুর কোনও ভূমিকা ছিল না। তিনি যদি ব্যক্তিগত ভাবে এই সম্মান গ্রহণ করেন তবে ত্রিপুরার মানুষকে অপমান করা হবে। তবে মুক্তি যুদ্ধে ত্রিপুরাবাসীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। মানিকবাবু যদি ত্রিপুরাবাসীর হয়ে এই সম্মান নেন তবে কিছু বলার নেই।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও এই বিষয়ে সরব। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রতনলাল নাথের বক্তব্য, মানিকবাবুকে এই সম্মান দেওয়ার অর্থ, ইতিহাসকে বিকৃত করা। তিনি বলেন, “মানিকবাবু বা তাঁর দল, মুক্তি যুদ্ধে কারও কোনও ভূমিকাই ছিল না। আসলে চিন তখন বাংলাদেশের বিপক্ষে, পাকিস্তানের পক্ষে। সেই কারণে সিপিএমও মুক্তি যুদ্ধে চিনের পক্ষেই ছিল।” তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরার তৎকালীন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী, শচীন্দ্রলাল সিংহ মুক্তি যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বাংলাদেশি শরণার্থীদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। রতনবাবু বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে হস্তক্ষেপ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে একটি চিঠিও লিখেছেন বলে জানিয়েছেন। |