জাতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি যে ক্রমবর্ধমান ফের তার প্রমাণ মিলল বিহারের রাজ্যসভা নির্বাচনে, ক্ষমতাসীন জোট শরিকদের আসন ভাগাভাগিতে। রাজ্যসভার যে ষষ্ঠ আসনটি নিয়ে জেডিইউ ও বিজেপি-র মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল, মনোনয়নের শেষ দিনে তাতে যবনিকা পড়ল। বিজেপি তার জেদ থেকে সরে শেষে ওই ষষ্ঠ আসনে জেডইউ-কে সমর্থনের আশ্বাস দিল। ফলে ষষ্ঠ আসন নিয়ে কয়েকদিন ধরে পটনা ও দিল্লিতে একাধিক বৈঠকের পরে এনডিএ অটুট রাখতে বিজেপি নীতীশের কাছে নতি স্বীকার করল।
রাজ্যসভার ৩০ মার্চের নির্বাচনে মনোনয়নের শেষ দিন ছিল আজ। রবিবার পর্যন্ত জেডিইউ-বিজেপি দ্বন্দ্বের সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। সোমবার সকালে বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের আলোচনার পর জট কাটে। বিহার রাজনীতির কুশীলবদের মতে, নীতীশকে খুশি করতেই বিজেপির এই সিদ্ধান্ত। যদিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে খুশি নয় বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব ও দলীয় নেতাদের বড় অংশ। এই সিদ্ধান্ত যে বৃহৎ রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি-কে গিলতে হচ্ছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দলের রাজ্য সভাপতি সি পি ঠাকুরের কথায়, “এ নিয়ে জেদ ধরে রাখলে আগামী দিনে এনডিএ জোট ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত। সেটা এড়াতেই আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে নীতীশ কুমারের আলোচনার পরে আসনটি জেডিইউকেই ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হল।”
বিহাকে রাজ্যসভার যে ছ’টি আসনে ভোট, তার মধ্যে জেডিইউ তিনটি ও বিজেপি দু’টি আসনে লড়বে, এটা প্রথমেই ঠিক হয়। গোল বাধে ষষ্ঠ আসনটি নিয়ে। এই আসনে জেতার জন্য এনডিএ জোট শরিক বিজেপি-র হাতে ছিল অতিরিক্ত ২১টি ভোট, জেডিইউ-এর হাতে ছিল অতিরিক্ত ১৩টি ভোট। যেহেতু বেশি ভোট তাঁদের হাতে সেই কারণে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব এই আসনটি দাবি করে। জেদ ধরেন নীতীশও। এমনকী বিধান পরিষদের আগামী নির্বাচনে বিজেপি-কে অতিরিক্ত আসনের প্রতিশ্রুতিও নীতীশ দেন। তবে তাতে বরফ গলেনি। শেষ পর্যন্ত এনডিএ জোট অক্ষুণ্ণ রাখতেই বিজেপি জাতীয় নেতৃত্ব নীতীশের দাবি মেনে নেন।
নির্বাচনে দুই দলের উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলেন, জেডইউ-এর রাজ্য সভাপতি বশিষ্ট নারায়ন সিংহ ও বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক, ওড়িশার ধর্মেন্দ্র প্রধান। জেডইউ-এর রাজ্য সভাপতি বশিষ্ট নারায়ণ সিংহ বলেন, “সকালে আলোচনার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। এক সঙ্গে চলতে গেলে কিছু মত পার্থক্য থাকেই। আলোচনা করে তা মেটানো যায়। এই নির্বাচনে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে, সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখেই জোট ধর্ম পালন করা হল।” |