হাসপাতালকে দুষল পুলিশ
ধর্ষণের অভিযোগে ডাক্তারি পরীক্ষায় টালবাহানার নালিশ
র্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরীক্ষা নিয়ে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে টালবাহানার অভিযোগ করলেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিকেরাই। তাঁদের অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে ধর্ষণের অভিযোগে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে গিয়ে চিকিৎসকেরা ২৪-৩০ ঘণ্টা সময় নিচ্ছেন। তার ফলে ডাক্তারি পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রমাণ সংগ্রহে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সমস্যার কথা স্বীকার করলেও ‘টালবাহানার’ অভিযোগ মানতে চায়নি। মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম থাকা এবং হাসপাতালের রোগীর অত্যধিক চাপের জন্য ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষার ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যাচ্ছে।
আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরেও কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে গিয়ে ২৪-৩০ ঘন্টা সময় নিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে আমাদের কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধে হচ্ছে। মহকুমার বেশ কয়েকটি থানা থেকে আমার কাছে এ ধরনের রিপোর্ট এসেছে।” তাঁর অভিযোগ, গত ২ মার্চ জয়গাঁর একটি ৩ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রায় ৩০ ঘন্টা পরে চিকিৎসকরা তার মেডিক্যাল টেস্ট করেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অভিযোগ। তিনি বলেন, “এতে অনেক সময় প্রমাণ নিয়ে সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” আলিপুরদুয়ারের বিশিষ্ট আইনজীবী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়ও মনে করেন, যাঁরা ধর্ষিতা হয়েছেন তাঁদের চিকিৎসা ও আইনের প্রমাণের জন্য যত দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা করানো দরকার। না-হলে অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে সমস্যা হতেই পারে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়গাঁ থানার একটি মামলায় ২৬ ডিসেম্বর ভগৎ সিংহ নগর এলাকার এক কিশোরীকে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’দিন পরে ২৮ ডিসেম্বর তার মেডিক্যাল টেস্ট হয়। কালচিনি থানার হ্যামিলটনগঞ্জ এলাকার এক কিশোরীকে ৩১ আগস্ট আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে মেডিক্যাল টেস্ট হয় ২ সেপ্টেম্বর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক অভিযোগ করেন, “অধিকাংশ ধর্ষণের মামলায় হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে গেলে দু’তিন দিনের আগে মেডিক্যাল টেস্ট করেন না চিকিৎসকরা।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার জানান, ধর্ষণ কান্ডে ভর্তি মহিলাদের মেডিক্যাল করাতে মাঝেমধ্যে দেরি হচ্ছে বলে তাঁর কাছেও খবর এসেছে। চিকিৎসকদের ধর্ষণ কান্ডে ভর্তি মহিলাদের চিকিৎসা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট দ্রুত তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বপনবাবু বলেন, “মূল সমস্যা হচ্ছে হাসপাতালে দিন দিন বেড়ে চলা রোগীর চাপ। প্রয়োজনের তুলনায় আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ নেই। বর্তমানে তিনজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ছুটি নিলে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধে হচ্ছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতি বিভাগে তিন জন চিকিৎসক। এখন দিনে প্রায় ৮০-৯০ জন রোগিণী ভর্তি হন। তাদের প্রসব, অস্ত্রোপচার সামলানোর পরে ধর্ষণের অভিযোগের ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। এক একটি ধর্ষণের মামলার পরীক্ষা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরী করতে প্রায় দেড় দুঘন্টা সময় লাগে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.