বিপজ্জনক ধূপগুড়ির বাজার, আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা
মাথায় চাঙর খসে পড়ার আতঙ্কে দিন কাটছে ধূপগুড়ির সুরেশ দে স্মৃতি মার্কেটের ব্যবসায়ীদের। দু’বছর আগে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের তরফে বিপজ্জনক ঘোষণা করা ওই বাজারে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলছে কেনাকাটার কাজ। ইতিমধ্যে চাঙর খসে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা মিলে ৭ জন জখম হয়েছেন। এর পরেও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ বাজার সংস্কারে উদ্যোগী না-হওয়ায় স্থানীয় ক্রেতা ও বিক্রেতা মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার। যদিও জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি দীপ্তি দত্ত ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বাজার সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হলেও পুনর্বাসন নিয়ে কিছু সমস্যার জন্য কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে।” ১৯৯০ সালে ধূপগুড়ি শহরে ওই দোতলা বাজার তৈরি করে জেলা পরিষদ। বাজারের এক তলায় দেড়শো ব্যবসায়ীকে দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। শুরু থেকে সেখানকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি ছিল ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের। সামান্য বৃষ্টিতে জলকাদা টপকে বাজারে যাতায়াত করতে হয়। দোতলায় মাছের বাজার বসে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মাছ বাজারের জল জমে অল্প দিনের মধ্যে ভবনের ছাদ নষ্ট হতে শুরু করে। বিপদ বুঝে বাজার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। চাপে পড়ে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ এলাকা পরিদর্শন করে বাজারের ভবনকে বিপজ্জনক ঘোষণা করে। কিন্তু পরে কোনও কাজ হয়নি। জেলা পরিষদ দেড়শোজন ব্যবসায়ীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না-করে ভবন সংস্কারের প্রস্তাব দিলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন ওঠে বাজারের কাজ শেষ হতে বছর পার হয়ে যাবে। ওই সময় দোকান বন্ধ থাকলে তাঁদের সংসার চলবে কেমন করে! ওই উতোরচাপানের মধ্যে বিপজ্জনক বাজারে চলতে থাকে কেনাকাটার কাজ। বেড়ে চলে দুর্ঘটনা। গত দেড় বছরে ওই বাজারে ৭ জন ক্রেতা-বিক্রেতা জখম হয়েছেন। এক বছর আগে মিষ্টি ব্যবসায়ী সত্যরঞ্জন ঘোষ দোকানে বসে খদ্দের সামলানোর সময় আচমকা মাথায় ছাদের একটি বড় চাঙর ভেঙে পড়ে গুরুতর জখম হন। টানা ১৫ দিন শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোমে চিকিৎসার পরে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরেন। ওই ছাদের তলায় বসে সত্যরঞ্জনবাবু বলেন, “কখন ফের চাঙর খসে পড়ে তা নিয়ে আতঙ্কে থাকি। কবে যে বাজার সংস্কার করা হবে জানি না।” ওই বাজারের মুদির দোকানের মালিক সুনীল কুণ্ডুর মাথায় কয়েক মাস আগে চাঙর খসে পড়ে। তাঁকেও এক মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এলেও তিনি ভয়ে দোকান খুলতে পারছেন না। সুনীলবাবুর ভাই সুশীল কুণ্ডু ওই বাজারে জুতোর ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, “যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দাদা আতঙ্কে দোকানে আসছেন না। ছাদ মেরামত করা হলে তিনি দোকান খুলবেন।” ধূপগুড়ির ব্যবসায়ীদের যৌথ সাংগঠন ফোসিড-এর সম্পাদক হিমাদ্রী সাহা বলেন, “বাজারের ব্যবসায়ীরা মাথায় বিপদ নিয়ে ব্যবসা করছেন। এ ভাবে চলতে পারে না। দ্রুত পুনর্বাসন দিয়ে বাজার সংস্কারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ ছাড়াও পাশাপাশি অন্য কোথাও মাছের বাজার তৈরির জন্য জেলা পরিষদকে অনুরোধ করা হয়েছে।” জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বাস্তুকার অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য স্টল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী এপ্রিল মাস নাগাদ বাজার সংস্কারের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.