উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে রবিবার দু’টি খুনের ঘটনায় জড়িয়ে গেল সিপিএমের নাম।
একশো দিনের কাজে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে এ দিন সকালে বীরভূমের মুরারই থানার হরিশপুর গ্রামে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। নিহত দুলাল শেখের (২৭) বাড়ি ওই গ্রামের মিয়াঁপাড়ায়। নিহতকে তাদের সমর্থক বলে দাবি করেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। দু’দলেরই অভিযোগ, সিপিএমের লোকজন এই খুন করেছে। সিপিএম নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওই ঘটনায় স্থানীয় আমডোল পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্যের ছেলেকে পুলিশ আটক করেছে। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।”
|
নিহত পুলক তরফদারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা
ওমপ্রকাশ মিশ্র। রবিবার বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত |
এ দিনই দুপুরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার দ্বেগুনে মহম্মদ ইসমাইল (৪০) নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়। জগন্নাথপুরের বাসিন্দা ইসমাইল ইটভাটার মালিক। দুষ্কৃতীদের তলোয়ারের কোপে গুরুতর জখম নিহতের দুই ভাইকে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ইসমাইলকে খুন করেছে। সিপিএমের পাল্টা দাবি, এই ঘটনা দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষের পরিণতি। দু’পক্ষই কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “জমির দখল নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। সেই বিবাদকে ঘিরে এ দিন দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক জনের মৃত্যু হয়। এখনও কেউ ধরা পড়েনি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে দ্বেগুন এলাকায় ইসমাইলের ইটভাটা। ওই ভাটা লাগোয়া ধানের জমির মালিকানাকে নিয়ে বিবাদ ছিল ইসমাইল এবং দ্বেগুনেরই বাসিন্দা ইরমান আলির। সালিশি সভাও ডেকেও বিবাদ মেটানো যায়নি। বরং দু’পক্ষের তিক্ততা চরমে উঠেছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এ দিন ওই জমি থেকে ধানের চারা তুলছিলেন শ্রমিকেরা। তদারকি করছিলেন ইসমাইল। ওই সময় ইরমানের নেতৃত্বে কিছু সশস্ত্র দুষ্কৃতী চারা তুলতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা থেকে শুরু হয় সংঘর্ষ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে খুন করে ইসমাইলকে। দাদাকে বাঁচাতে ইটভাটা থেকে খুড়তুতো ভাই হবিবুর রহমান ছুটে গেলে তাঁকেও কোপানো হয়। ইসমাইলের আরও দুই খুড়তুতো ভাই জখম হন। জেলা কংগ্রেস নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মোস্তাক আলমের অভিযোগ, “হামলাকারীরা প্রত্যেকেই সিপিএম সমর্থক। পরিকল্পনা করেই ওরা হামলা চালায়।” সিপিএমের হরিশ্চন্দ্রপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক স্বপন মণ্ডল অবশ্য বলেন, “দু’পক্ষই কংগ্রেসের সমর্থক। অযথা সিপিএমের নাম জড়ানো হচ্ছে। মৃত বা অভিযুক্ত কারও সঙ্গেই আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” |