আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে মা ও ছেলের। মৃতদের নাম লক্ষ্মী সাহা (৫৫) ও টুয়া সাহা (২০)। রবিবার সন্ধ্যায় বহরমপুর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিরুপমাদেবী রোডের একটি বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে ওই আগুন ধরে যায় বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মনে করছে। বহরমপুর থানার আইসি মেহায়মেনুল হক বলেন, “প্রাথমিক তদন্তের পরে মনে হচ্ছে, রান্নার জন্য বাজার চলতি ছোট সিলিন্ডার ফেটেই এই বিপত্তি ঘটেছে। সম্ভবত ওই রকম কোনও ছোট সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে গিয়েছিল। তখনই প্রদীপ বা মশা তাড়ানোর ধূপের আগুন থেকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। সেই সময়ে ওই বাড়িতে এক মহিলা ও তাঁর ছোট ছেলে ছিলেন। তাঁরা কেউই ঘরের বাইরে বের হতে পারেনি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে প্রতিবেশীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, আগুন লাগার সময়ে বাইরে থেকে ওই বাড়ির দরজায় শিকল তোলা ছিল। ফলে মা ও ছেলে কেউই ঘর থেকে বের হতে পারেননি। কবে পুলিশ জানিয়েছে, এই দাবি ঠিক কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরুপমাদেবী রোডের ওই বাড়িটি ইটের গাঁথনির উপরে টালির ছাউনি দেওয়া। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, অত্যন্ত গরিব পরিবার। দুই ছেলের আয়ে কোনও রকমে সংসার চলে। লক্ষ্মীদেবীর স্বামী বেশ কয়েক বছর আগে মারা যান। তাঁর চার ছেলেমেয়ের মধ্যে টুয়া গ্যাসের দোকানে কাজ করত। বড় ছেলে বুয়া কাপড়ের ব্যবসা করেন। বাড়িতে অবিবাহিত প্রতিবন্ধী এক দিদি রয়েছেন। আর গোরাবাজার টাউন ক্লাবের কাছে ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে। এদিন বোন সুমির সঙ্গে দিদি মামনি ওয়াইএমও মাঠে অনুষ্ঠিত বহরমপুর মেলায় গিয়েছিলেন। মামনি বলেন, “বোনকে সঙ্গে নিয়ে এদিন মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি সব আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে।” মা ও ভাইয়ের মৃত্যুতে মানসিক ভাবে অবশ্য ভেঙে পড়েছেন বড় ছেলে বুয়া। স্থানীয় ক্লাবের মাঠে তিনি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে যান। এদিকে ওই আগুন লাগার খবর পেয়ে গোটা এলাকা পোড়া বাড়ির সামনে ভেঙে পড়েছে। প্রতিবেশী শুভাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগুন লাগার বেশ কিছু ক্ষণ পরে ওই বাড়ি থেকে সিলিন্ডার ফাটার আওয়াজ পেয়েছি। প্রতিবেশীরাই জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তার মধ্যে দমকল দফতরের কর্মীরা এসে যান।” দমকল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর ফলে আগুনও দ্রুত আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়। দমকলের দু’টি গাড়ি থেকে জল ঢেলে আগুন নেভানো হয়। |