‘আমার বাড়ি’ প্রকল্প
বিরোধ জেলা পরিষদ-মৎস্য দফতরে
গৃহহীন মৎস্যজীবীদের জন্য ‘আমার বাড়ি’ প্রকল্প রূপায়ণ নিয়ে এ বার মৎস্য দফতরের সঙ্গে কাজিয়ায় জড়িয়ে পড়ল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। উপভোক্তাদের নামের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব, দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ জেলা পরিষদের। এই নিয়ে তদন্তের পাশাপাশি বাড়ি না বানিয়ে উপভোক্তাদের হাতে সরাসরি টাকা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী আবু হেনা ও জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে জেলা পরিষদ। জেলা মৎস্য দফতর অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির (যার বেশিরভাগই আবার তৃণমূল পরিচালিত) অনুমোদিত উপভোক্তা-তালিকা মেনেই বরাদ্দ হয়েছে আগে। আড়াই বছরের পুরনো ওই তালিকা নতুন বরাদ্দের ক্ষেত্রেও বিবেচনা করা যাবে কি না জানতে ফের পঞ্চায়েত সমিতির কাছেই পাঠানো হয়েছে। ফলে দুর্নীতি বা ত্রিস্তর পঞ্চায়েত এড়িয়ে টাকা বরাদ্দের কোনও প্রশ্নই নেই।
গৃহহীন মৎস্যজীবীদের নতুন পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ‘আমার বাড়ি’ প্রকল্পের সূচনা। ২০০৯ সালে রাজ্যের আবাসন দফতর এই প্রকল্পে বরাদ্দ করলে কাঁথি মহকুমার পাঁচটি ব্লকের মৎস্যখটিগুলি থেকে গৃহহীন মৎস্যজীবীদের নামের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতিগুলির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে অনুমোদিত মোট ৫০০ জনের নামের ওই তালিকা আবাসন দফতরে পাঠানো হয়। রাজ্যের আবাসন দফতর প্রথম পর্যায়ে ওই তালিকাভুক্তদের মধ্যে থেকে ১২৫টি গৃহহীন মৎস্যজীবী পরিবারের জন্য টাকা বরাদ্দ করে। সেই টাকায় খেজুরি-২ ব্লকে ১২৫টি ‘আমার বাড়ি’ তৈরির টেন্ডারও ডাকা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ২৫০টি পরিবারের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়।
জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেনের অভিযোগ, “মৎস্য দফতর বাম জমানায় আমার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে খেজুরি-২ ব্লকে নিজেদের ও সিপিএমের মনোমত ১২৫ জনকে টাকা পাইয়ে দেয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে কাঁথি ১ ও ২ এবং রামনগর ১ ও ২ ব্লকের আরও ২৫০টি পরিবারের নামের তালিকা নিজেদের মতো করে তৈরি করেই পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে অনুমোদনের জন্য পাঠায়।” মামুদ হোসেনের আরও অভিযোগ, “দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির কাছে যে নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে তাতে দারিয়াপুর ও বামুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০ জন উপভোক্তার মধ্যে ১৪ জনেরই পাকা বাড়ি রয়েছে। আবার প্রথম পর্যায়ে খেজুরি-২ ব্লকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরি না করে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার বদলে ৮৪ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়েছে মৎস্য দফতর।” যদিও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ এখন নিজেরাই সরাসরি টাকা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
সহ-সভাধিপতির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে মৎস্য দফতরের সহ-অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, “২০০৯ সালে তৃণমূল পরিচালিত দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতি যে তালিকা অনুমোদন করেছিল, দ্বিতীয় পর্যায়ে বরাদ্দ হওয়ার পরে সেটিই সংশোধনের জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কাছে পাঠানো হয়েছে। মাঝের ওই সময়ে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বা নিজের টাকায় কেউ বাড়ি তৈরি করতেই পারে। এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই তালিকাটি পঞ্চায়েত সমিতির কাছে পাঠানো হয়েছে। ফলে জেলা পরিষদের অভিযোগের কোনও ভিত্তিই নেই।” খেজুরি-২ ব্লকে উপভোক্তাদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার অভিযোগও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সুরজিৎবাবু। তিনি বলেন, “এত শত অভিযোগ করার আগে সহ-সভাধিপতি মৎস্য দফতর থেকে খোঁজ নিতে পারতেন। তা হলে আর অহেতুক বিভ্রান্তির শিকার হতেন না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.