অধ্যক্ষ ইস্তফায় অনড়, অচলাবস্থা
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগপত্র গৃহীত না হলেও কেশপুর কলেজের ‘অচলাবস্থা’ পুরোপুরি কাটল না। কলেজ সূত্রের খবর, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুশান্তকুমার দোলুই এখনও তাঁর পদত্যাগে ‘অনড়’। ক’দিন আগে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে পরিচালন সমিতির সভাপতি চিত্ত গরাইয়ের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানান। নানা জল্পনা শুরু হয় সুশান্তবাবুর পদত্যাগ ঘিরে। কলেজেরই একটি সূত্রের খবর, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নামে একাংশ তৃণমূল কর্মীর ‘অন্যায় আবদার’ সহ্য করতে না পেরেই পদত্যাগ করেন সুশান্তবাবু।
পরিস্থিতির জেরে শনিবার পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকেন সমিতির সভাপতি তথা জেলা তৃণমূল নেতা চিত্তবাবু। বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে অধিকাংশ সদস্যই সুশান্তবাবুকে পদে থাকার অনুরোধ করেন। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৪ মার্চ কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠান হবে। ওই দিন পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবেন সুশান্তবাবু। পরে ফের পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে। তখন পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
এমনিতে কেশপুর কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস ৯ মার্চ। কিন্তু দোল-উৎসব থাকায় এ বার ওই কর্মসূচি ২৪ মার্চ পালিত হবে। শনিবারের বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যই জানান, এই পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকলে বিভিন্ন কাজে সমস্যা হবে। তাঁরা প্রথমে সুশান্তবাবুকে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করারই অনুরোধ জানান। কিন্তু, নিজের অবস্থানে ‘অনড়’ থাকেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। শেষমেশ সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপনের পরে ফের পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে। তবে শনিবারের বৈঠকেও ‘অন্যায় আবদারে’র প্রসঙ্গ ওঠে। এ দিন বৈঠকে সমিতির ১২ সদস্যের মধ্যে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন প্রতিনিধি, ১ শিক্ষক প্রতিনিধি ও কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি (সিপিএম নেতা তড়িৎ খাটুয়া, দাসেরবাঁধ কঙ্কাল-কাণ্ডে নাম জড়িয়ে যাওয়ায় যিনি ‘ফেরার’) গরহাজির ছিলেন। উপস্থিত ৮ সদস্যের এক জন ওই প্রসঙ্গ তুলে স্পষ্টই বলেন, “এমনটা চলতে পারে না।” যার থেকে অনুমান, ২৪ তারিখের পরের বৈঠকেও বিষয়টি ফের উঠবে।
একদা সিপিএমের ‘লালদুর্গ’ বলেই পরিচিতি ছিল কেশপুরের। প্রায় এক দশক ধরে এই এলাকায় কার্যত একাধিপত্য ছিল তাদের। তবে গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যায় কেশপুরও। প্রভাব বাড়তে থাকে তৃণমূলের। অথচ, প্রবল পরিবর্তনের হাওয়াতেও কেশপুর থেকে বিধানসভায় জিতেছিলেন সিপিএমেরই রামেশ্বর দোলুই। কিন্তু অচিরেই স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীদের অনেকে কেশপুর ছাড়া হন। এই অবস্থায় গোটা ব্লকের মতোই সুকুমার সেনগুপ্ত মহাবিদ্যালয়েও ‘নিয়ন্ত্রণ’ কায়েম হয় নতুন শাসকদলের। তৃণমূলের জেলা নেতা চিত্তবাবু হন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি। যে কলেজে এক বছর আগেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অস্তিত্বই ছিল না, সেখানেই ছাত্র সংসদও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করে তারা। কিন্তু ব্লক জুড়েই নতুন শাসকদলের কাজকর্ম নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। তোলাবাজি, জুলুম, জরিমানা, সন্ত্রাসের অভিযোগ তো রয়েছেই, তৃণমূলেরই বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে কেশপুরে এমনকী জারি করতে হয়েছিল ১৪৪ ধারাও। কলেজেও তৃণমূলের একাংশের ‘অন্যায় আবদার’ অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছনোর ফলেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদত্যাগে বাধ্য হন বলে একটি সূত্রের বক্তব্য। যদিও সভাপতি চিত্তবাবুর দাবি, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ব্যক্তিগত কারণেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। অন্য কোনও কারণ নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.