কীটনাশক দিয়ে মারা হচ্ছে মাছ, বিপন্ন লোকটাক
চিরাচরিত পদ্ধতির বদলে মাছ মারতে জলে ছড়ানো হচ্ছে বিষাক্ত কীটনাশক। পেঁচা ও বুনো হাঁস মারতে টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিষ-ফড়িং। আসলে ইঞ্জেকশন দিয়ে ফড়িংয়ের শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিষ। সেই ফড়িং খেয়ে মারা পড়ছে ভাসমান তৃণভূমিতে বিচরণশীল বুনো হাঁস ও পেঁচা। এই ভাবে মণিপুরের লোকটাক সংলগ্ন এলাকায় জলেস্থলে ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে রাসায়নিক বিষ। বিষ দিয়ে মারা মাছ ও বুনো হাঁসের মাংস খাওয়াটা শরীরের পক্ষেও ক্ষতিকর। পরিবেশবিদরা উদ্বিগ্ন। এই অবস্থায় ‘সেভ লোকটাক’ ও ‘লোকটাক ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ ফুবাকচাও ও পূর্ব লোকটাক এলাকায় মরা মাছ ও সেঁকা মাছ বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করল।
লোকটাক ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রকল্প অধিকর্তা থংনাম ইবোবি জানান, লোকটাকে বাঁধ নির্মাণের পরে মৎসজীবীরা, মাছ মারার জন্য কীটনাশকের ব্যবহার শুরু করেন। বর্তমানে, বেশি মাছ মারতে ‘হিলডান’-এর মতো কীটনাশক ব্যবহার শুরু হয়েছে। যা মানুষের শরীরের পক্ষেও মারাত্মক। বিশেষভাবে মাইবাম ফুমলাক ও ফুবাকচাও এলাকায় ঢালাও ভাবে এই কীটনাশকের ব্যবহার চলছে। তাই, বাজার থেকে মরা মাছ না কেনাই মঙ্গল। ইতিমধ্যেই, পরীক্ষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সরোবরের ওই অংশের জলে বিষাক্ত রাসায়নিকের পরিমাণ রীতিমতো বিপজ্জনক। মাছেদের শরীরে মিলেছে বিষ। মৎসজীবীদের, মাছ মারতে এই বিপজ্জনক পদ্ধতি ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালেও ‘হিলডান-’এর ব্যবহার বন্ধ হয়নি।
মণিপুরের পরিবেশবিদ আর কে রঞ্জন বলেন, “এই সমস্যার সূত্রপাত প্রায় চার দশক আগে। সরকারকে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। লোকটাক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও ইথাই বাঁধ গড়ার আগে স্থানীয় মৎসজীবীরা প্রথাগত পদ্ধতিতেই মাছ ধরতেন। কিন্তু বাঁধ গড়ার পরে জলের গভীরতা অনেক কমে যায়। বস্তুত তখন থেকেই মৎসজীবীরা নতুন পদ্ধতিতে মাছ মারা শুরু করেন। শুরু হয় কীটনাশকের ব্যবহার।”
কেবল মাছ ধরতেই নয়, বুনো হাঁস ও পেঁচা মারতেও বিষ ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে, পদ্ধতিটি বেশ অভিনব। ফড়িং ধরে তার শরীরে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পর, ভাসমান তৃণভূমি বা ফুমদিতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে সেইসব ‘বিষ-ফড়িং’। ওই ফড়িং খেয়ে মরছে হাঁস-পেঁচা। লোকটাক জুড়ে এ ভাবে বিষের ব্যবহার কমাতে পরিবেশবিদরা মৎসজবীদের কাছে তো বটেই, পাশাপাশি সরকারকেও সচেতন হতে আর্জি জানিয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.