নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
মুখে বললেও মণিপুরে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতার আশা করছে না। কংগ্রেস শিবির থেকে আজ আভাস মিলেছে, তৃণমুল সাত থেকে দশটি আসন পেলে তাদের তরফে জোট গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, যদি কপালে শিকে ছেঁড়ে সেই সম্ভাবনায় মণিপুরে অকংগ্রেসি দলগুলিও জোট গড়তে তৎপর। এনসিপি, মণিপুর পিপলস পার্টি, সিপিআই, সিপিএম-এমন এগারোটি দল মিলে গড়া হয়েছে পিপলস ডেমোক্রাটিক অ্যালায়েন্স (পিডিএ)। এর মধ্যেই আজ মণিপুরে পাঁচটি পাহাড়ি জেলায় ৬৩টি বুথে অনুষ্ঠিত হল পুনর্নির্বাচন। চারটি বুথে ভোটকর্মীরা না পৌঁছতে পারায়, সেগুলিতে আগামিকাল ভোট নেওয়া হবে। এ দিন ভোট পড়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে গ্রেনেড নিক্ষেপ ও পাহাড় থেকে বুথের দিকে জঙ্গিদের গুলি ছোড়ার ঘটনা ছাড়া পুনর্নির্বাচন পর্ব মোটামুটিভাবে শান্তিতেই কেটেছে।
চান্ডেল জেলার মোদি ও উনুপাত কেন্দ্রে, তিনবারই ভোটারদের লম্বা লাইন দিয়ে ভোট দিতে হল। প্রথমবার বুথ দখল, পরের বার, ছবিতে গরমিলের অভিযোগে ভোটগ্রহণ বাতিল হয়ে যায়। আজ চড়া রোদে ভোট দেওয়ার পরে চান্ডেলের ভোটাররা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আর পাঁচ বছরের মধ্যে তাঁরা বুথমুখো হবেন না। নির্বাচনকেন্দ্রিক সন্ত্রাস অবশ্য তৃতীয় দফাতেও পিছু ছাড়েনি। পুলিশ জানায়, গত কাল রাতে ইয়াইসকুল কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ই চাঁদ সিংহের বাড়িতে গ্রেনেড মারা হয়। তবে কেউ হতাহত হননি। পশ্চিম ইম্ফলের থোংজু কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী বিজয় কোইজামের বাড়ির কাছে বোমা রাখতে গিয়ে কাল রাতে ধরা পড়ে দুই জঙ্গি। আজ সাইকুল কেন্দ্রের একোউমুল্লাম বুথে ভোট চলাকালীনই পাহাড়ের মাথা থেকে দফায় দফায় জঙ্গিরা গুলি চালায়। ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও বুথ ছেড়ে চলে যাননি। এ দিকে, তামেংলং জেলার তামেই কেন্দ্র আটটি বুথের মধ্যে চারটিতে ভোটকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি। ফলে, সেগুলিতে কাল ভোট নেওয়া হবে।
৬ মার্চ ভোট গণনা। তবে ইতিমধ্যেই সরকার গড়া নিয়ে মণিপুরে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তৎপরতা। মুখে বললেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া নিয়ে তেমন নিশ্চিত নয় কংগ্রেস। বিজেপি ও তৃণমূল বাদে, বিরোধী দলগুলি একজোট হওয়ায় কংগ্রেসের চিন্তাও বেড়েছে। সেই সঙ্গে, কংগ্রেস বিধায়কী দলের নেতা তথা পরেরবার মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়েও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ ও শিল্পমন্ত্রী এরাবত সিংহের শিবিরে ঠান্ডা লড়াই চলছে। আগের বারের জোট সরকারের শরিক সিপিআই ভোটের আগেই জোট ভেঙে বেরিয়ে এসেছে। এই অবস্থায়, কংগ্রেস শিবিরের ইঙ্গিত, তৃণমূল ৭ থেকে ১০টি আসন পেলে, তাদের সঙ্গে জোট গড়ার প্রস্তাব দিতে পারে কংগ্রেস। বিরোধীরা, নাগা শাসকদল এনপিএফ-এর সঙ্গে হাত মেলানোয়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গাইখংগাম বলেন, “ক্ষমতার লোভে, মণিপুর বিভাজনের চক্রান্ত করা এনপিএফ-এর সঙ্গে যাঁরা হাত মিলিয়েছে, তাদের চরিত্র জনগণ বুঝতেই পারছে।” |