বৃদ্ধা একা থাকেন, জেনে নিয়ে আট ঘাট বেঁধেই লুঠ |
বছর কুড়ির যুবকটি পর্ণশ্রীর ফ্ল্যাটবাড়িতে ডিশ অ্যান্টেনা লাগাতে এসেছিল। সেই বাড়িরই ফ্ল্যাটে এক বৃদ্ধা কত দিন ধরে একা থাকেন, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বারবার সে-কথা জিজ্ঞাসা করছিল সে।
পুলিশ জানায়, বৃদ্ধা যে ফ্ল্যাটে একা থাকেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত
হয়েই এক শাগরেদকে নিয়ে সেখানে লুঠের ছক কষেছিল অমিত শর্মা নামে ওই যুবক।
পর্ণশ্রীর ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাটে লুঠপাটের ঘটনায় রবিবার দুপুরে জোকা থেকে অমিত ও সুভাষ চক্রবর্তী নামে তার এর যুবক সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, অমিত ও সুভাষ জেরায় স্বীকার করেছে, তারাই শনিবার বিকেলে মায়া ভট্টাচার্য নামে ওই বৃদ্ধার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে তাঁকে জখম করে দু’টি সোনার চুড়ি এবং একটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালায়। ধৃতদের কাছ থেকে ওই সব জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ। আজ, সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।
কী ভাবে খোঁজ মিলল অমিত ও সুভাষের?
পুলিশের দাবি, শনিবার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়াদেবী জানান, লুঠপাটের দিন পাঁচেক আগে কয়েক জন যুবক তাঁদের বহুতলের ছাদে ডিশ অ্যান্টেনা বসাতে এসেছিল। একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থার তরফে ওই অ্যান্টেনা বসানো হয়। স্থানীয় এক ডিলার ওই সংস্থার হয়ে অ্যান্টেনা বসানোর বরাত পেয়েছিলেন। অ্যান্টেনা বসাতে ওই ডিলার যে-সব কর্মীকে পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের সাহায্য করতে মই নিয়ে এসেছিল বছর কুড়ির একটি ছেলে। সেই ছেলেটিই তাঁকে বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, ওই ফ্ল্যাটে তিনি একা থাকেন কি না। বৃদ্ধা পুলিশকে জানান, তাঁর ছেলে বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য যে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাশের এলাকা শীলপাড়ায় থাকেন, সে-কথাও ওই ছেলেটিকে বলেছিলেন তিনি।
পুলিশি সূত্রের খবর, মায়াদেবীর বক্তব্য শোনার পরেই ডিশ অ্যান্টেনা সংস্থার স্থানীয় ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তদন্তকারীরা। মায়াদেবী যে-দিনের কথা বলেছেন, সে-দিন অ্যান্টেনা বসাতে কারা ওই ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন, সেখান থেকেই তা জানা যায়। অ্যান্টেনা বসানোর সেই কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই উঠে আসে অমিতের নাম। জানা যায়, জোকা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা অমিত মাঝেমধ্যে তাঁদের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করত। তার পরেই ধরা পড়ে অমিত। তার কাছ থেকেই খোঁজ মেলে সুভাষের।
পুলিশের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, সুভাষ অ্যান্টেনা বসানোর দিন অমিতের সঙ্গে মায়াদেবীর ফ্ল্যাটে যায়নি। বৃদ্ধার একা থাকেন এবং সেই জন্যই যে সে তাঁর ফ্ল্যাটে হানা দেওয়ার ছক কষেছে, বেকার সুভাষকে সেটা জানিয়েছিল অমিতই। শনিবার বিকেলে মায়াদেবী ফ্ল্যাটের দরজা খোলার পরে সে-ই তাঁর গলা টিপে ধরে বলে জেরায় অমিত স্বীকার করেছে। দমবন্ধ অবস্থায় বৃ্দ্ধা হাত-পা ছোড়ার চেষ্টা করায় অমিতই তাঁর বাঁ চোখের উপরে কামড়ে দেয়। |