৮৫% যন্ত্রাংশ তৈরি হবে ভারতেই
ডেমলারের তৈরি ট্রাক পথে নামছে ছ’মাসেই
তিন বছরের ‘হোমওয়ার্ক’ শেষ। ছ’মাসের মধ্যেই ভারতের রাস্তায় নামবে জার্মান বহুজাতিক ডেমলার গোষ্ঠীর আনকোরা ‘ভারতীয়’ ট্রাক ‘ভারতবেঞ্জ’।
ছয় দশক আগে টাটা গোষ্ঠীর টেলকো-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে তারাই প্রথম এ দেশে তৈরি করেছিল ট্রাক। এ বার সম্পূর্ণ নিজস্ব ট্রাক তৈরি শুরু করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক গাড়ি নির্মাতা এই জার্মান বহুজাতিক গোষ্ঠীর সংস্থা ডেমলার ইন্ডিয়া কমার্শিয়াল ভেহিক্লস (ডিআইসিভি)। একই সঙ্গে সংস্থার কতার্দের দাবি, যতই আর্থিক বৃদ্ধির হার কমুক বা পরিকাঠামো বৃদ্ধির সূচক নিম্নমুখী হোক না কেন, আগামী দিনে ভারতে উন্নয়নের গতি রুদ্ধ হবে না। যার ইঙ্গিত দিচ্ছে এ দেশে বাণিজ্যিক গাড়ির উর্ধ্বমুখী ব্যবসা।
সম্প্রতি হায়দরাবাদে আটটি হালকা ও ভারী ট্রাকের আবরণ উন্মোচন করে সংস্থার কর্তারা জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাজারে অবশ্য প্রথমে তিনটি গাড়ি আসবে। সব মিলিয়ে আগামী ২০ মাসের মধ্যে ৬-৪৯ টনের ১৭টি এমন গাড়ি বাজারে আনবেন তাঁরা।
ভারতের গাড়ি বাজার বিশ্বের তাবড় সংস্থার কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক কালে যখন বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলি আর্থিক বৃদ্ধি বজায় রাখা নিয়ে চিন্তিত, তখন চিন বাদে ভারতের উন্নয়নের ছবিটা সকলেরই নজর টানছে। এখন অবশ্য ভারতে যাত্রী-গাড়ির বাজারে কিছুটা ভাটা চললেও ট্রাকের মতো বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছেই। গাড়ি শিল্পের হিসেবে (সিয়াম), ২০২০-’১১-এ এপ্রিল-জানুয়ারিতে যাত্রী গাড়ির বিক্রি প্রায় ২০ হাজার কমলেও বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রি বেড়েছে প্রায় এক লক্ষ। ২০০৩-’০৪-এ ভারতে ২ লক্ষ ৬০ হাজার বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রি হয়েছিল। ২০১০-’১১-য় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার। যে বাজারের বেশিরভাগটাই দখলে রয়েছে টাটা মোটরসের। এর পর রয়েছে অশোক লেল্যান্ড, ভলভো আইশারের মতো সংস্থা।
এই বাজার ধরতে তিন বছর আগেই রীতিমতো আটঘাট বেঁধে নেমেছিল ডেমলার গোষ্ঠী। এত দিন তাদের গোষ্ঠীভুক্ত সংস্থা মার্সিডিজ বেঞ্জের তকমাতেই (ব্র্যান্ড-নামে) ওই সংস্থার ট্রাক এ দেশে আমদানি করত সংস্থা। প্রথমে এ জন্য পৃথক সংস্থা ডিআইসিভি তৈরি করে তারা। করখানা গড়ার জন্য দু’বছর আগে চেন্নাইয়ের অদূরে গাড়ি- শিল্প তালুক ওরাগাদামকে বেছে নেওয়ার পরে গত বছর একেবারে এ দেশের জন্যই নতুন একটি ব্র্যান্ড ‘‘ভারতবেঞ্জ’ চালু করার কথা জানায় তারা। কারখানায় লগ্নির পরিমাণ প্রায় ৪৪০০ কোটি টাকা। ভারত কেন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ,তা তখনই বোঝা যায় যখন ডিআইসভি-র সিইও তথা এমডি মার্ক লিস্টোসেলা জানান, এই প্রথম ডেমলার কোনও একটি দেশের বাজারের কথা মাথায় রেখে নতুন ব্র্যান্ড তৈরি করল। উল্লেখ্য, গত বছরও ডেমলার গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ডিটার জেশে বলেছিলেন “নয়া ব্র্যান্ড ঘোষণার এটিই সঠিক সময় এবং জায়গা।”
এ দেশের বাজারের চাহিদা বুঝতে শুধু নতুন তকমাই নয়, তিন বছর ধরে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়েছেন তাঁরা। লিস্টোসেলার কথায়, “এ দেশের সমাজের অংশীদার না হতে পারলে সাফল্য পাওয়া যাবে না।” আগামী ১৮ এপ্রিল কারখানাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
লিস্টোসেলা কিংবা সংস্থার অন্যতম কর্তা ভি আর ভি শ্রীপ্রসাদের আশা, সুদের হার শীঘ্রই কমতে শুরু করবে। ফলে গাড়ি শিল্পের সামগ্রিক ভাটা কেটে যাবে। তাঁদের দাবি, এক দিকে দেশের নবীন প্রজন্মের চাহিদা ও অন্য দিকে, আর্থিক বৃদ্ধির হার এগিয়ে নিয়ে যেতে পরিকঠামো উন্নয়ন, এই দুইয়ের হাত ধরেই আগামী দিনে বাণিজ্যিক গাড়ির আরও ব্যবসা বাড়বে। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে অন্য বহুজাতিকের মতোই তাদের ট্রাকগুলির ৮৫ শতাংশ যন্ত্রাংশই ভারতে তৈরি হবে। দাম নিয়ে কর্তারা মুখ না-খুললেও তা যে আকর্ষণীয় হবে, সেই ইঙ্গিত দেন তাঁরা। চেন্নাইয়ের কারখানাটির উৎপাদন ক্ষমতা আপাতত বার্ষিক ৩৬ হাজার। পর্যায়ক্রমে তা ৭১ হাজার পর্যন্ত বাড়তে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.