শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ফের সোনা জিতে নজর কাড়ল আরও দুই ছাত্র-ছাত্রী। ভারত সরকার আয়োজিত প্রতিবন্ধীদের জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা ‘স্পেশাল অলিম্পিক’ এ সোনা এবং রূপোর পদক পেয়েছে দুই মানসিক প্রতিবন্ধী দেবরাজ সেন এবং সুজয়া রায়। ১৭ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি চেন্নাইয়ে জহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় জেলার ৭ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিল। এর মধ্যে দেবরাজ শর্টপাট এবং ১০০ মিটার দৌড়ে দু’টি সোনা এবং ১০০ মিটার রিলে রেসে রৌপ্য পদক লাভ করে। সুজয়াও নরম বল ছোঁড়ায় প্রথম হয়ে সোনার পদক পায়। |
এর আগে ‘ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক সুইমিং ফেডারেশন অফ ইণ্ডিয়া’ আয়োজিত সাঁতার প্রতিযোগিতায় দু’টি সোনা এবং তিনটি রূপোর পদক জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল হাত-পা পোলিও আক্রান্ত নলহাটির অর্চনা হেমব্রম। ফের আরও দুই প্রতিবন্ধী সাফল্য পাওয়ায় খুশি সকলেই। সিউড়ি বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা দেবরাজের আদি বাড়ি সিউড়ি লাগোয়া কড়িধ্যা গ্রামে। তার বাবা স্বরাজ সেন শিক্ষকতা করেন। স্বল্প মানসিক প্রতিবন্ধী দেবরাজ ২০১০ সালে জেলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। এখন শিক্ষক-শিক্ষণের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। খেলাধুলোর পাশাপাশি আঁকাতেও সমান দক্ষ। অন্য দিকে, সুজয়ার বাড়ি রাজনগরের মাধাইপুর গ্রামে। বাবা প্রদোষকান্তি রায় রেশন ডিলার। মাঝারি মাত্রার মানসিক প্রতিবন্ধী সুজয়া সিউড়ি আর টি গার্লস স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। নাচেও দক্ষতা রয়েছে তার। ছোট থেকেই সে থাকে জেঠু পীযূষকান্তি রায়ের কাছে। দুই কৃতীর কথায়, “এই সাফল্য জেলার গৌরব বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।”
সন্তানের এ হেন সাফল্যে গর্বিত তাদের অবিভাবকেরাও। স্বরাজবাবু এবং পীযূষবাবু বলেন, “প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ওরা যে সফল হয়েছে তার জন্য আমরা বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। ওরা যেন জেলার মুখ উজ্জ্বল করতে পারে, সেই কামনা করি।” ক্রীড়া কমিটির রাজ্য তথা সর্বশিক্ষা মিশনের সমন্বয়ক শুকদেব চক্রবর্তীও বলেন, “জাপান ইন্টার ন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় এই দুই প্রতিযোগীর যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানেও তারা সাফল্য অর্জন করবে বলেই আমার বিশ্বাস।”
|