সিপিএম কর্মী সাগর মেটেকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগে দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা হল মলয় ফৌজদার ও পরিমল ফৌজদার। নানুরের জলুন্দি গ্রামে তাদের বাড়ি। ওই গ্রামেরই সাগর মেটেকে বঙ্গছত্র এলাকায় শুক্রবার বাস থেকে নামিয়ে খুন করায় অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার নানুর থানা এলাকায় সিপিএমের ডাকা বন্ধে মিশ্র প্রভাব পড়ে। তবে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় এ দিন এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন ছিল। |
পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ করা হচ্ছে।” ধৃতেরা এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলে পরিচিত। এ দিন বোলপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আগে আটক করা দু’জনকে রবিবার বিকেলে পুলিশ ছেড়ে দেয়। তৃণমূলের নানুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি অশোক ঘোষ দাবি করেন, “সিপিএমের মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ আমাদের দলের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে সিপিএম মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।”
সিপিএমের ডাকা বন্ধে নানুর এলাকায় অধিকাংশ বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পথে বের হওয়া বাসিন্দারা চূড়ান্ত নাকাল হন। তবে তৃণমূল প্রভাবিত নানুর, বাসাপাড়া প্রভৃতি এলাকায় জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক ছিল। ব্যতিক্রম ছিল কীর্ণাহার। এখানে বন্ধের ভাল প্রভাব দেখা যায়। দোকান, বাজার বন্ধ ছিল। সকালে সিপিএমের মিছিলও বের হয়। শনিবার সন্ধ্যায় নানুর এলাকায় বন্ধের সমর্থনে সিপিএম মিছিল বের করেছিল। ওই বন্ধ ব্যর্থ করার দাবিতে তৃণমূলও পাল্টা মিছিল করায় কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়। তাই এলাকার রাস্তায় এ দিন সকাল থেকে পুলিশের টহল চোখে পড়ে। তবে দিনের শেষে কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটায় পুলিশ ও প্রশাসন স্বস্থির শ্বাস ফেলেছে। |
সিপিএমের নানুর জোনাল কমিটির সম্পাদক হাসিবুর রহমানের দাবি, “বন্ধে মানুষের ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে। আমাদের ঘরছাড়া দলীয় কর্মী সাগরকে নৃশংস ভাবে খুন করার প্রতিবাদ জানাতে এলাকার মানুষজন আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।” তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের হুমকিতে কিছু এলাকার ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে বাধ্য হয়েছিলেন।” তৃণমূলের নানুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি অবশ্য সিপিএমের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া সিপিএমের এখন একটাই অস্ত্র-বন্ধ। বন্ধে মানুষের হয়রানি ছাড়া আর কিছু প্রাপ্তি হয় না। তাই নানুরের বাসিন্দারা এ দিনের বন্ধে সাড়া দেননি। কীর্ণাহারে সিপিএমের কয়েক জন কর্মী নিজেদের দোকান বন্ধ রেখেছিলেন।” |