|
|
|
|
আট মাস ধরে বন্ধ ভাতা, সমস্যায় ৪ ডোম পরিবার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
ভাতা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। ফলে সঙ্কটে পড়েছেন শবদেহ সৎকারের কাজে নিযুক্ত আসানসোলের চারটি ডোম পরিবার। পুর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে তাঁরা সৎকার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ওই দফতরের মেয়র পারিষদ তথা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়।
আসানসোল পুরসভার সবচেয়ে পুরনো শ্মশান ঘাটটি বার্নপুরের দামোদর নদের পাড়ে কালাঝরিয়ায়। প্রতি দিন সেখানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য আসানসোল পুর এলাকা ছাড়াও আশপাশ থেকে বাসিন্দারা আসেন। সৎকারের বিনিময়ে সামান্য ভাড়া দিতে হয়। এই কাজে যুক্ত পরিবারের সদস্যেরা সেই টাকা পুরসভায় জমা দেন। তার একটি অংশ ভাতা বাবদ ওই পরিবারগুলিকে দেওয়া হয়। কয়েক দশক ধরে এই ব্যবস্থাই চলে আসছে। কিন্তু গত ৮ মাস ধরে পুরসভা পরিবারগুলিকে ভাতা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। তা সত্ত্বেও প্রতি মাসে সৎকারের কাজ করছেন তাঁরা।
ভাতা না মেলায় তাঁরা সঙ্কটে পড়েছেন বলে জানান ওই সব পরিবারের সদস্যেরা। শঙ্কর ডোম নামে এমনই এক সদস্য জানান, তাঁরা চার পুরুষ ধরে সৎকারের কাজ করছেন। তিনি বলেন, “আট মাস আগে পুরসভার কিছু লোকজন এসে বলেছিলেন, আমাদের ভাতা বন্ধ হবে। কিন্তু পুরসভায় ১২০ টাকা দৈনিক বেতনে অস্থায়ী চাকরি মিলবে। এর বিনিময়ে আমরা সৎকার ও শ্মশান ঘাটের দেখভাল করব। এ ছাড়া সৎকারের ভাড়া নিয়ে পুরসভায় জমা করব।” শঙ্করবাবুর অভিযোগ, গত আট মাস ধরে তাঁরা সৎকারের জন্য আসা মানুষজনের কাছ থেকে ভাড়ার টাকা আদায় করে পুরসভায় জমা করেছেন। কিন্তু ভাতা বা অস্থায়ী চাকরি, কিছুই জোটেনি। রমেশ ডোম বলেন, “এখন মৃতদেহ সৎকার না করে জনমজুরির কাজ করছি।” বার্নপুর শহরে ঠেলা চালান দশরথ ডোম। তিনি বলেন, “পেট তো চালাতে হবে। অন্য কাজ না করলে চলবে কী ভাবে?”
এ ভাবে কর্মী কমে যাওয়ায় মৃতদেহ সৎকারে আসা মানুষজনকে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। শঙ্করবাবু সাফ জানান, এক মাসের মধ্যে টাকা না পেলে তাঁরা আর সৎকারের কাজ করবেন না। ওই পরিবারগুলি কাজ বন্ধ করে দিলে সাধারণ মানুষজন যে অসুবিধায় পড়বেন, তা মানেন শ্মশানঘাট সংক্রান্ত মেয়র পারিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শবদেহ সৎকার পিছু ভাড়া ওই পরিবারগুলি নিয়মিত জমা দিচ্ছেন, তা আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি। তাঁদের ভাতা বন্ধ করা হয়েছে বলেও জেনেছি। কী ভাবে এ সব হয়েছে তার তদন্ত শুরু করেছি।”
কে বা কারা ওই সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে দৈনিক হাজিরায় অস্থায়ী চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল, তা তাঁর জানা নেই বলেই জানিয়েছেন ডেপুটি মেয়র। তিনি জানান, সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। |
|
|
|
|
|