নতুন সরকারের আমলে প্রথম বন্ধ। তাই বন্ধের শহরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বাড়তি সতর্ক কলকাতা পুলিশও।
পুলিশ সূত্রের খবর, বন্ধের দিন শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে গত শনিবার আলিপুরের বডিগার্ড লাইন্সে সব থানার ওসি-সহ বিভিন্ন অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন লালবাজারের কর্তারা। এক পুলিশ অফিসার জানান, আজ, মঙ্গলবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং স্বাভাবিক যান চলাচল বজায় রাখতে পুলিশকে অন্যান্য বারের তুলনায় একটু বেশি মাত্রায় তৎপর থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য ১০ হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে।
কেন এমন বাড়তি তৎপরতা?
বন্ধ না-করার জন্য রাজ্য সরকারের এ রকম ‘কড়া’ মনোভাব আগের সরকারের আমলে কখনও দেখা যায়নি বলেই মনে করছেন পুলিশকর্তারা। এ বারের ছবিটা তাই আগের বন্ধগুলির থেকে আলাদা বলে পুলিশ মনে করছে। তাই বাড়তি নজরদারি ও সতর্কতার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কলকাতা ও শহরতলি এলাকায়।
সোমবার কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম জানান, গোটা শহরে প্রায় ৩০০টি পুলিশ পিকেট বসানো হচ্ছে। বাস ডিপো, ট্রাম ডিপোগুলিতে মোতায়েন করা হচ্ছে পুলিশ। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা হচ্ছে ফেরিঘাটেও। উচ্চপদস্থ অফিসারদের নেতৃত্বে থাকছে ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’। থাকছে র্যাফ-ও। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, এ বার দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনে অটোয় চেপে টহলের ব্যবস্থা হয়েছে। মোটরসাইকেল চেপেও পুলিশকর্মীরা টহল দেবেন। যুগ্ম কমিশনার বলেন, “বন্ধ করার নামে জনজীবনে কোনও রকম বাধা দেওয়া হলে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, বন্ধের দিন কোথাও কোনও রকম গোলমাল হলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের নির্দেশ গিয়েছে থানার ওসি-দের কাছে। কোনও গণ্ডগোলের খবর এলে উচ্চপদস্থ কর্তারাও ঘটনাস্থলে যাবেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং সংবেদনশীল এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হবে।
পুলিশের নজর থাকছে মেট্রো স্টেশনগুলিতেও। বন্ধের দিনগুলিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মেট্রো রেল শহরের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, মেট্রোর লাইন অবরোধ করা যায় না। মেট্রো-কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীরা স্টেশনে ঢুকতে বাধা না-পেলে গন্তব্যে পৌঁছতে অসুবিধা হবে না। সে ক্ষেত্রে সব ক’টি স্টেশনে অতিরিক্ত মেট্রো রেল পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। স্টেশনের বাইরেও পাহারা থাকছে।
তা হলে কি এ বার বন্ধে জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে?
জাভেদ বলেন, “সাধারণ মানুষকে বলছি, নির্ভয়ে রাস্তায় বেরোন। আপনার যে কোনও সমস্যায় কলকাতা পুলিশ সাহায্য করবে।” |