রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চলতি সপ্তাহে কলকাতায় আসছেন ইনফোসিস কর্তারা। বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (সেজ) সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের বিরোধিতার কথা জেনেও মুখোমুখি আলোচনায় বসতে তারা পিছপা হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করার পরে রাজারহাটের প্রকল্প নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংস্থা। সরকারি সূত্রের খবর, আগামী বুধবার শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইনফোসিস কর্তৃপক্ষ।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে জানান, ইনফোসিসকে বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা দেবে না সরকার। তিনি বলেন, “আমরা ইনফোসিসকে চাই এ রাজ্যে। কিন্তু সেজ তকমা দেওয়া যাবে না। কারণ আমরা সেজ-এর বিরোধী। বিশেষ আর্থিক অঞ্চল হিসেবে যে-সব সুবিধা তারা পায়, আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকলে সে-সব সুবিধাই ওদের দেব।”
ইনফোসিস মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এক ই-মেল বার্তায় সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গ্লোবাল হেড (কমার্শিয়াল অ্যান্ড কর্পোরেট রিলেশনস) বিনোদ হামপাপুর জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলতি সপ্তাহে বৈঠকে বসার কথা। তার পরেই এ রাজ্যে তাদের প্রকল্প নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। পূর্ব পরিকল্পনা মতো সোমবারই এ রাজ্যের প্রকল্প নিয়ে নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার কথা ছিল ইনফোসিসের। গত শুক্রবার পাঠানো এক ই-মেলে সংস্থা জানিয়েছিল সে কথা। এর পরে শনিবার সংস্থা কর্তৃপক্ষকে মুখোমুখি আলোচনায় আমন্ত্রণ জানান পার্থবাবু। সেজ তকমা না-দিতে পারলেও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রাজ্য কথা বলতে আগ্রহী বলে ফের জানান তিনি।
বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমাকে কেন্দ্র করেই এ রাজ্যে ইনফোসিসের প্রথম ক্যাম্পাস ঘিরে নয়া বিতর্কের সূত্রপাত। তৃণমূল সরকার নির্বাচনের আগেই বিশেষ আর্থিক অঞ্চল নিয়ে তাদের বিরোধিতা স্পষ্ট করে দিয়েছে। অন্য দিকে সংস্থাও জানিয়েছে বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা ছাড়া ব্যবসা করা সম্ভব নয়। তার কারণ এর দৌলতে পাওয়া যায় কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া একাধিক করছাড়ের সুবিধা।শুল্ক, পরিষেবা ও আয়কর-সহ বিভিন্ন ছাড় দিতে পারে কেন্দ্রই। রাজ্য নয়।
প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের মনোভাব জানতে রাজ্য সরকারি সংস্থা হিডকোকে সপ্তাহ দুয়েক আগেই চিঠি দিয়েছিল ইনফোসিস। সেজ বা বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা না-পেলে জমি ফেরত দেওয়ার কথাও জানায় তারা। সেই চিঠির উত্তর এখনও পায়নি সংস্থা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আগামী বুধবারের বৈঠকেই পরিষ্কার হয়ে যাবে ‘ব্র্যান্ড’ ইনফোসিস এ রাজ্যে থাকবে, নাকি সেজ বিতর্কে হাতছাড়া হবে হাজার কোটি লগ্নি ও ২০ হাজার কর্মসংস্থান। |