অভিজ্ঞান ও ঐশ্বর্যাকে ভারতে ফেরানোর জন্য নরওয়ের উপর চাপ তৈরি করতে সে দেশে বিশেষ কূটনৈতিক দূত পাঠাল বিদেশ মন্ত্রক। নরওয়ের প্রবাসী বাঙালি পরিবারের ওই দুই শিশুসন্তানকে ফিরিয়ে আনার জন্য বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর নির্দেশে আজই সে দেশে পৌঁছন মন্ত্রকের সচিব (পশ্চিম) মধুসূদন গণপতি। পরে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন টুইট করে বলেন, “নরওয়ের বিদেশমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরের সঙ্গে অসলোয় বৈঠক করেন মধুসূদন। আলোচনা সদর্থক হয়েছে।” নরওয়ের শিশুকল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গেও মধুসূদন দেখা করবেন, জানান আকবরউদ্দিন।
আজ থেকে দিল্লির চাণক্যপুরীতে নরওয়ে দূতাবাসের কাছে অভিজ্ঞান-ঐশ্বর্যার পরিবারের লোকেরা ধর্নায় বসেছেন। কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএমদলমত নির্বিশেষে সব নেতানেত্রী আজ তাঁদের পাশে দাঁড়ান। সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট প্রথম থেকেই উদ্যোগী হয়েছিলেন। আজ তাঁর পাশাপাশি ধর্নায় যোগ দেন বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ। ছিলেন কংগ্রেসের মণিশঙ্কর আইয়ারও। চার দিন এই ধর্না চলবে। নরওয়েতে বিশেষ দূত পাঠানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বৃন্দা। |
নয়াদিল্লিতে নরওয়ের দূতাবাসের সামনে নাতি-নাতনির ছবি নিয়ে
সাগরিকার বাবা-মা মনোতোষ ও শিখা চক্রবর্তী। ছবি: প্রেম সিংহ। |
ঘটনাটি রাজনীতির বাইরে রাখার কথা বললেও সিপিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে। তাদের বক্তব্য, দুই শিশুর ঠাকুর্দা-ঠাকুমা অজয় ও কৃষ্ণা ভট্টাচার্য, দাদু-দিদা মনোতোষ ও শিখা চক্রবর্তী প্রথমে মহাকরণে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরই শরণাপন্ন হন। বিদেশমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন মমতা। কিন্তু তার পরে রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের কোনও নেতাকেই এই নিয়ে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। একই ভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পরোক্ষে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, “আমরা রাজনীতি করছি না। কিন্তু ১২ মার্চের আগে অভিজ্ঞান-ঐশ্বর্যা তাদের বাবা-মার কাছে না পৌঁছলে আমরা সংসদে সরব হব।”
অনুরূপ ও সাগরিকা কবে সন্তানদের ফেরত পাবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওই দম্পতির আইনজীবী স্বেন স্বেন্ডসন জানিয়েছেন, নরওয়ে প্রশাসন দুই শিশুকে তাদের কাকার হাতে তুলে দিতে সম্মত হয়েছে। অনুরূপের ভাই অরুণাভাস অনেক আগেই নরওয়ে পৌঁছে গিয়ে অপেক্ষা করছেন। আদালতে পরবর্তী শুনানি ২৩ মার্চ। তার আগে দুই শিশুকে হাতে পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দম্পতি ও তাঁদের পরিবারের দাবি, শিশুদের ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৮ মার্চ। তার পরেই তাদের ভারতে ফেরত পাঠানো হোক। যদিও নরওয়ের শিশু কল্যাণ দফতর দুই শিশুর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করছে। |