ইস্কোর সীমানা পাঁচিল দেওয়া নিয়ে পুরুষোত্তমপুরে পুলিশ-গ্রামবাসী খণ্ডযুদ্ধের সময়ে ধৃতদের ব্যক্তিগত ‘বন্ড’-এ জামিনে মুক্তি দিল পুলিশ। সোমবার এলাকায় নতুন কোনও গণ্ডগোল হয়নি। তবে পুলিশি টহল চলছে। যে জায়গায় পাঁচিল তোলা নিয়ে অশান্তি হয়, সেখানে পুলিশ পিকেটও রয়েছে।
ইস্কোর সম্প্রসারণ এলাকায় পাঁচিল তোলায় বাধা দিতে গেলে পুরুষোত্তমপুরের বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। জনতার ছোড়া ইট-পাটকেলে জখম হন জনা সাতেক পুলিশকর্মী। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালায়। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে জখম হন অনেকে। পুলিশ ও র্যাফের উপস্থিতিতে পাঁচিল তোলা হয়। |
ইস্কোর আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পে হিরাপুরের নাকড়াসোতা, কুইলাপুর ও পুরুষোত্তমপুর মৌজার প্রায় ৩৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। ইস্কো সূত্রে জানা যায়, কাজও হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। কিন্তু পুরুষোত্তমপুরে ৭ মিটার জায়গায় পাঁচিল তুলতে বাধা দিচ্ছিলেন এলাকাবাসী। ওই জায়গায় সম্প্রসারণ প্রকল্পের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল একটি ধর্মস্থান, যা এলাকায় ‘ঝোড়াবুড়ি মন্দির’ নামে পরিচিত। ধর্মস্থান স্থানান্তর ও জমিদাতাদের চাকরির দাবিতে ‘পুরুষোত্তমপুর গ্রামরক্ষা কমিটি’-র নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন বাসিন্দারা। ইস্কোর তরফে জানানো হয়, সম্প্রতি গ্রামের মধ্যে পাকা ধর্মস্থান গড়ে দেওয়া হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের শর্তে চাকরির বিষয়টি না থাকলেও এখন তা আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তবু বাসিন্দারা ওই জায়গায় পাঁচিল তুলতে দিচ্ছিলেন না।
রবিবার সেখানে পাঁচিল তুলতে গেলে ঝামেলা শুরু হয়। পুরুষোত্তমপুর গ্রামরক্ষা কমিটির সম্পাদক চন্দ্রশেখর রায়-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক করা হয় আরও চার জনকে। দুপুরে রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটকের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন পুরুষোত্তমপুরের বাসিন্দারা। মলয়বাবু আগামী বুধবার মহাকরণে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ইস্কো ও গ্রামবাসীদের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি থাকা জখম বাসিন্দাদের দেখতেও যান মন্ত্রী।
রবিবার রাতের দিকেই ব্যক্তিগত ‘বন্ড’-এ ধৃতদের জামিন দেয় পুলিশ। ছেড়ে দেওয়া হয় আটকদেরও। তবে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় টহল চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |