|
|
|
|
রায়গঞ্জ কলেজ |
চাঁদা না দেওয়ায় শিক্ষককে ‘হুমকি’ তৃণমূল নেতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
বাড়ি বানানোর সময়ে এলাকায় মন্দির তৈরির জন্য এক লক্ষ টাকা ‘চাঁদা’ না-দেওয়ায় কলেজ শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর সহকর্মী এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রধান বাবুলাল বালা এই মর্মে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তপন নাগ নামে ওই তৃণমূল নেতা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তপনবাবু রায়গঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি। ওই কলেজে শিক্ষাকর্মী পদে চাকরি করেন। বাবুলালবাবুর অভিযোগ, “বছরখানেক আগে বাড়ি বানানো শুরু করি। তখন থেকেই এলাকার বাসিন্দা তপনবাবু মন্দিরের জন্য ১ লক্ষ টাকা চাঁদা চান। তা দিতে পারব না জানাই। বৃহস্পতিবার রাতে মাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে আমাদের রাস্তা আটকে চাঁদা না-দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। তাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ
|
বাবুলাল বালা |
|
তপন নাগ |
করছি। সেই জন্যই রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।” তপনবাবুর পাল্টা অভিযোগ, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাঁর দাবি, “মন্দির ৪-৫ বছর আগে তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে চাঁদা দিয়েছেন। বাবুলালবাবুর কাছে চাঁদা চাওয়াই হয়নি।’’ তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাতে রায়গঞ্জ থানায় ৭২ জন স্থানীয় বাসিন্দার সই করা একটি স্মারকলিপি জমা পড়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ওই কলেজেরই শিক্ষক তথা তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলার আহ্বায়ক দেবাশিস বিশ্বাসের পরামর্শেই তপনবাবুকে তোলাবাজ হিসেবে চিহ্নিত করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। ওই অভিযোগ প্রত্যাহার না-করলে বাবুলালবাবুকে সামাজিক ভাবে বয়কট করা হবে।
তবে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকার বলেন, “এই ধরনের অভিযোগকে দল কখনওই সমর্থন করবে না। পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশের রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষ জানান, দু’তরফের অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৫ ফ্রেব্রুয়ারি তৃণমূল নেতা তিলক চৌধুরীর নেতৃত্বে এই রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। ওই সময়ে দলেরই শিক্ষা সেলের নেতা দেবাশিসবাবু প্রকাশ্যে ঘটনার নিন্দা করেন। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১০ সালেও রায়গঞ্জের মারাইকুড়া ইন্দ্রমোহন হাই স্কুলের এক শিক্ষক প্রহ্লাদচন্দ্র বিশ্বাসের কাছ এক লক্ষ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তপনবাবুর বিরুদ্ধে। তবে তিনি এই ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। এ দিন প্রহ্লাদবাবু বলেন, “ভয়ে পুলিশকে কিছু জানাতে সাহস পাইনি। বাবুলালবাবু এগিয়ে আসায় মুখ খুললাম।” বাবুলালবাবু পুলিশের কাছে যে অভিযোগ দায়ের করেছেন, সেখানে প্রহ্লাদবাবু সাক্ষী হিসাবে সই করেছেন। শুক্রবার বাবুলালবাবু উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কলেজের টিচার্স কাউন্সিল ও কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটার উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির কাছে তপনবাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
দেবাশিসবাবু এদিনও অভিযোগ করেন, “তপনবাবু যে তোলাবাজি করেন সেটা অনেকেই জানেন। পুলিশ অভিযোগ খতিয়ে দেখলেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।” |
|
|
|
|
|