চলে যেতে পারেন অসহযোগী অফিসারেরা, কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
ন্নয়নের কাজে যে সব অফিসার ‘অসহযোগিতা’ করছেন, তাঁদের কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে উত্তরবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে একাধিক ক্ষেত্রে ‘ইচ্ছে করে কাজে ঢিলেমি’র প্রসঙ্গে ওই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার দ্রুত গতিতে সামগ্রিক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। অফিসারেরা প্রায় সকলেই ভাল। কিন্তু, যে সব অফিসার অসহযোগিতা করতে চান, তাঁরা চলে যেতে পারেন। সরকার কোনও ঢিলেমি, অসহযোগিতা বরদাস্ত করবে না। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের কৃষি-শিল্প-শিক্ষা-স্বাস্থ্যের উন্নয়নের কাজ জোরকদমে করতে সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়াতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিনের বৈঠকে রাজ্যের ১২ জন মন্ত্রী তো বটেই, রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী ও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়ও ছিলেন। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও রাজ্যের সব দফতরের সচিব ও ছয় জেলার বিভিন্ন বিভাগের আমলা, পুলিশকর্তারাও হাজির ছিলেন। বিকেল ৩টে নাগাদ বাগডোগরায় নেমে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বৈঠকে যান। অফিসারেরা পরিচয়পর্ব সারার পরে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের অবস্থানগত গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রথমেই জানিয়ে দেন, একাধিক আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত উত্তরের ছয় জেলা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। সে জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অফিসারদের অত্যন্ত দ্রুত প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
ওই সময়েই উত্তরবঙ্গে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) কাজ ‘ঠিকঠাক হচ্ছে না’ বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি নিজে যেমন খাটতে পারেন, তেমন কেউ না-খাটলে তা তিনি ধরেও ফেলতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের অনেকেই। কারণ, সম্প্রতি মালদহে সদ্যোজাতদের মৃত্যু নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, প্রসূতি অবস্থায় ঠিক মতো পুষ্টিকর খাদ্য না-মেলায় জটিলতার সূত্রপাত। প্রসূতি ও শিশুদের পুষ্টির বিষয়টি যথাসম্ভব নিশ্চিত করার জন্যই রয়েছে আইসিডিএস প্রকল্প।
পাশাপাশি, রেশনের খাদ্যসামগ্রী আনার ক্ষেত্রে ‘রেক’-এর কোনও সমস্যা থাকলে দ্রুত সমাধানের জন্য রেলমন্ত্রী সাহায্য করবেন বলেও বৈঠকে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে কৃষকদের শস্য বিমা করানোর জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লাগাতার মাইক নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মাইক বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। সে ক্ষেত্রে মাইক ছাড়াই গ্রামে-গ্রামে ঘুরে প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকের শেষ পর্বে কাজে গতি আনার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অফিসারদের জানান, আগে ৪ মাসে অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ শংসাপত্র পেতেন। বর্তমান রাজ্য সরকারের চেষ্টায় তা ১ মাসেই বিলি হচ্ছে। ওই সময়ে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস জানিয়ে দেন, শিলিগুড়িতে তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখেছেন প্রায় ১ হাজার শংসাপত্র তৈরি হয়ে থাকলেও বিলি হচ্ছে না। তা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বিভাগীয় সচিবের কাছে কারণ জানতে চান। বিভাগীয় সচিব তাঁকে জানান, এক অফিসার মাসখানেকের জন্য ছুটিতে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তা শুনে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেক ক্ষেত্রেই নানা ভাবে ‘অন্তর্ঘাত’ হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, যে অফিসারেরা অসহযোগিতা করতে চান, তাঁরা চলে যেতে পারেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.