লৌহকপাটের আড়ালে ছিলেন ১৮১ দিন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরে শুক্রবারেই প্রথম বিধানসভায় হাজির হলেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। রীতি মেনে বিধানসভায় তিনি জামিনের নথিপত্র জমা দিয়েছেন বলে বিধানসভা সূত্রের খবর। সরকার পক্ষ তাঁর সম্পর্কে যে-সব তথ্য চেয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল, তা সরবরাহের জন্য এ দিন বিচারকের কাছে সময় চেয়েছে রাজ্য সিপিএম।
সুশান্তবাবু বিধানসভার সরকারি আশ্বাসন কমিটির সদস্য। এ দিনই বেলা ১টায় ওই কমিটির বৈঠক ছিল। সুশান্তবাবু যখন বিধানসভায় পৌঁছন, তত ক্ষণে কমিটির বৈঠক শেষ। ফলে বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি তিনি। আশ্বাসন কমিটির চেয়ারম্যান, সিপিএমের আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা এখন রাজ্যের বাইরে। তাঁর জায়গায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তৃণমূলের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আশা করেছিলাম, সুশান্তবাবু বৈঠকে আসবেন। কারণ তিনি এখন জামিনে মুক্ত। কিন্তু তিনি বৈঠকে আসেননি। খুব বেশি বিধায়ক উপস্থিত না-থাকায় আমরা এক সময় বৈঠক শেষ করে দিই।” বিধানসভা সূত্রের খবর, ‘রিলিজ অর্ডার’-এর নথিপত্র না-আসা পর্যন্ত সুশান্তবাবু স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছেন স্পিকার। বিধানসভার সচিবালয়ের কমর্ীর্রা তা সুশান্তবাবুকে জানিয়ে দিয়েছেন।
দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত সুশান্তবাবুর সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে আগেই আলিমুদ্দিনের সাহায্য চেয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব যাতে সেই সব তথ্য সরকার পক্ষের হাতে তুলে দেন, তার নির্দেশ দেওয়ার জন্য তদন্তাকারীরা আবেদন জানিয়েছিলেন আলিপুরে বিশেষ আদালতে। তদন্তকারীরা জানতে চান, সুশান্তবাবু সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী কি না, তাঁর ভাতা কত ইত্যাদি। সরকার পক্ষের সেই আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক কৃষ্ণা পোদ্দার। এ দিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর পক্ষে আদালতে হাজির হন আইনজীবী সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায়। ওই সব তথ্য পেশ করার জন্য আদালতের কাছে সময় চান তিনি। বলেন, সামনেই সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। নেতারা ব্যস্ত থাকবেন। তাই তাঁদের সময় দেওয়া হোক। এই ব্যাপারে ১৭ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
কঙ্কাল কাণ্ডে তো বটেই, এই দুর্নীতির মামলাতেও সুশান্তবাবুকে জেল-হাজতে থাকতে হয়েছিল। পুলিশ এই মামলায় ঠিক সময়ে আদালতে চার্জশিট পেশ করতে না-পারায় তিনি জামিন পান। সুশান্তবাবু জেল-হাজতে থাকার সময় ডি এল খান রোডে তাঁর সরকারি আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ পাঁচ লক্ষাধিক নগদ টাকা উদ্ধার করে বলে জানান সরকারি আইনজীবী প্রণবেশ মণ্ডল। |