|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
বই যা-ই হোক, নামটা তাঁর নামেই রাখতে হয় |
একবার চাঁদা বাড়ানোর প্রস্তাব হল ক্লাবের; প্রশান্তচন্দ্র হঠাৎ বললেন, ‘আমার এস্থেটিক অবজেকশন আছে।’ শুনে তো সবাই প্রায় চিৎপটাং সে আবার কি? চাঁদা বাড়াতে এস্থেটিক অবজেকশন কী হতে পারে? এবং এ নিয়ে অনেকক্ষণ তর্ক চলল। প্রশান্তচন্দ্র অনেকবার বোঝাতে চেষ্টা করলেন, কিন্তু সকলেই তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করতে লাগলেন। তখন তাতাদা বললেন, ‘দেখো, ও কী বলতে চাচ্ছে আমার মনে হয় আমি ধরতে পেরেছি। ওর বোধ হয় বক্তব্য এই যে, এই প্রস্তাবে ওর সেন্স অব প্রপ্রাইটি আর অ্যাপ্রোপ্রিয়েট্নেস্-এ আঘাত লাগছে। চাঁদা বাড়ানোটা, সোজাসোজি বললেই হয়, বাঞ্ছনীয় নয় কিন্তু ও তো ওভাবে কথা বলে না। কী প্রশান্ত তাই না?’ প্রশান্ত বললেন, ‘হ্যাঁ, খানিকটা তাই বটে।’ তাতাদা, মানে সুকুমার রায়। এ গল্প শুনিয়েছেন প্রসাদরঞ্জন রায়, ‘সুকুমার রায় ও মন্ডে ক্লাব’ নিবন্ধে। লীলা মজুমদারের পালানাটক, পরশুরামের লেখায় নরনারীর ‘আন্তঃসম্পর্ক’, উত্তর-ঔপনিবেশিক বাংলা সাহিত্য আন্দোলন, রবীন্দ্রনাথের গান, বাংলা নামকরণ, দেওয়াল-লিখন... বহু ধরনের বহু লেখা একসঙ্গে করে সম্পাদনা করেছেন বন্দনা দে, নাম দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ও অন্য স্বর: তাঁর সময়ে ও পরে (লৌকিক শিল্প ও সংস্কৃতি মঞ্চ, পরিবেশক: দে’জ)। যে কোনও সঙ্কলন বানিয়ে শিরোনামে রবীন্দ্রনাথকে রাখার মানে কী? বা রে, সার্ধশতবর্ষ না? ‘গুরুর পদ আমার নয় আমি পথিক। গম্য স্থানে যাঁরা পৌঁছেছেন তাঁরাই গুরু।’ সুছন্দা সরকারের বাবাকে লেখা চিঠিতে কবুল করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। মৈত্রেয়ী দেবীর লেখায় জানা যায় সুছন্দার বাবা সুহৃদ্চন্দ্র সিংহ: ‘বাবরি করে কাটা চুল, গৌরবর্ণ, সুদর্শন, সুসঙ্গের জমিদার-তনয় সুহৃদকে রবীন্দ্রপরিমণ্ডলে বরাবর দেখেছি।’ আর তাঁর মা অনিন্দিতা: ‘যার নাম কবি দিয়েছিলেন সেঁউতি। সেঁউতি অপরূপা, দীর্ঘদিন পর্যন্ত সে ছিল স্থিরযৌবনা... ।’ বাবা-মাকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র নিয়েই বেরিয়েছে সুছন্দার স্মৃতিস্পর্শে রবীন্দ্রনাথ/অপ্রকাশিত চিঠি আর ছবির মালা (মনফকিরা, ১৫০.০০)। কবির মূল চিঠিগুলির প্রতিলিপিও রয়েছে বইটিতে। জীবনের শেষ প্রান্তে লেখা রবীন্দ্রনাথের তিনটি ছোটগল্পের সমাহারে যে ‘তিনসঙ্গী’ বইটি বেরয়, তাতে তিনি ‘জৈব দিকটিতে যথেষ্ট জোর দিয়েছেন। তা হলেও সামাজিক দিকটি হারিয়ে যায় না। পৌরাণিক কাহিনির সঙ্গে যোগ রেখেও তাই নির্দিষ্ট দেশকালের সীমায় সমস্যাটির বিচার করেছেন তিনি।’ জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য তাঁর রবীন্দ্রনাথের তিন সঙ্গী-র (কোরক, ৫০.০০) ভূমিকায়। এই বিচারধারা অনেকের কাছেই অচেনা ঠেকতে পারে, আর সেখানেই রচনাকারের চিন্তার অভিনবত্ব।
|
|
|
|
|
|