ফেডারেশনের নির্দেশ মানতে কলকাতা লিগের পঞ্চম এবং নার্সারি ডিভিসনের ছয়টি ক্লাবের নাম বদলে যাচ্ছে। পি এল এসের ছয়টি ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে সংযুক্তি হয়ে গেল ক্লাবগুলির। চুক্তি করে ক্লাবগুলি পাচ্ছে আর্থিক সাহায্য।
সাউথ ফোক ক্লাবের নাম হয়ে যাচ্ছে ইউরো মাস্কেটিয়ার্স। ইলিসিয়াম ক্লাব পি এল এসে খেলবে হাওড়া ম্যাঞ্চেস্টার নামে। এভারগ্রীণ ক্লাব খেলবে শিলিগুড়ি বেঙ্গল টাস্কার্স নামে। কসবা সমন্বয়ের নাম হয়ে গেল হলদিয়া হিরোজ। সেন্ট্রাল ক্যালকাটা ভেটারেন্স ক্লাব খেলবে কলকাতা ক্যামিলিয়ার্স নামে। দত্তবাগান শতদলের নাম হল দুর্গাপুর ভক্স।
সংযুক্তিকরণের পরের ক্লাবগুলির নাম মঙ্গলবার আই এফ এ-র গভর্নিং বডির সভায় অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে রবিবার ভারতীয় ফুটবলারদের নিলাম তোলার সম্ভবনা কম। শুক্রবারও আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বলে দিলেন, “পিএলএসে আমরা যা করেছি সব ফেডারেশন ও গভর্নিং বডিকে জানিয়ে করেছি। তারা আরও কিছু তথ্য চেয়েছে। শনিবার সকালে সেগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কোনও সমস্যা নেই।”
পি এল এস নিয়ে ফেডারেশন বনাম আই এফ এ-র লড়াই চলছিলই। তাতে নতুন মাত্রা জোরে ফেডারেশন থেকে পাঠানো বৃহস্পতিবারের চিঠি। তাতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ক্রেস্পো-কানাভারোরা যে ক্লাবগুলির হয়ে খেলবেন সেই ক্লাবগুলি নথিভুক্তি করা হয়েছে কি না? জানিয়ে দেওয়া হয়, যতক্ষণ না পুরো ব্যাপারটি সম্পর্কে আই এফ এ থেকে সদুত্তর আসবে তত দিন বিদেশি ফুটবলারদের ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যাপারটি ফিফাকে স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এটা জানার পরই উৎপলবাবুরা নিয়ম সংশোধন করার রাস্তা খুঁজতে শুরু করেন। তড়িঘড়ি নানা চুক্তি হয়।
পি এল এসের ক্লাবগুলির সংযুক্তিকরণের পর সব সমস্যা মিটে যাবে সেটা অবশ্য মনে হচ্ছে না। বরং অনেকেই আশঙ্কা করছেন ফেডারেশন এরপর আরও কিছু প্রশ্ন তুলতে পারে। দিল্লিতে ফেডারেশন সচিব কুশল দাসকে রাতে প্রশ্ন করা হলে তিনি বেশ ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, “আই এফ এ-তে চিঠি দিয়েছি, তারাই জবাব দিক। মিডিয়ার সঙ্গে কোনও কথা বলব না।”
আই এফ এ সচিব ‘কোনও সমস্যা হবে না’ বললেও আই এফ এ-র একাংশের সংশয় রয়েছে, ফেডারেশন শেষপর্যন্ত পি এল এস করতে দেবে কি না তা নিয়ে। সবথেকে বড় সমস্যা হাতে সময় খুব কম। গভর্নিং বডির সভা যে দিন তার পর দিন অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদেশি ফুটবলারদের ছাড়পত্রের আবেদনের শেষ দিন। ফেডারেশন নতুন করে কোনও প্রশ্ন তুললেই তাদের আর খেলানো কঠিন। এর উপর আছে আই এফ এ-র গঠনতন্ত্রের নানা নিয়ম কানুন। ফেডারেশন ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত বললেন, “সবাই মিলে চেষ্টা করছি। দেখা যাক কি হয়।”
আই এফ এ-র নিয়মকানুন যাঁরা ঘাঁটাঘাঁটি করেন তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন ১) নার্সারি বা পঞ্চম ডিভিসনের ক্লাবে বিদেশি খেলানো যাবে কী ভাবে? ২) লিয়েনে মাত্র দু’জন করে ফুটবলার নেওয়া যায়। ফেডারেশনের ছাড়পত্র না পেলে কীভাবে অন্য রাজ্যের ফুটবলাররা পি এল এসে খেলবেন? উৎপলবাবু বললেন, “আই এফ এ-র ছাতার তলায় পি এল এস আলাদা একটি টুর্নামেন্ট। সেখানে সব নিয়মই আলাদা। কোনও অসুবিধা নেই।”
নিয়মকানুনের জাঁতাকলে পরে সবথেকে অসহায় টুর্নামেন্টের প্রধান উদ্যোক্তা সি এম জি। ইতিমধ্যেই প্রচুর টাকা ঢেলে ফেলেছেন সংস্থাটি। লিওনেল মেসি-সহ আর্জেন্তিনাকে আনতে গিয়ে নানা ঝামেলায় পড়েও শেষপর্যন্ত সফল হয়েছিলেন তাঁরা। এ বার পি এল এসে আরও জট। আই এফ এর দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া তাদের সামনে আর কোনও রাস্তা নেই। |