দফতর খোলা। কিন্তু দুপুর দেড়টা পর্যন্ত দেখা নেই আধিকারিক, কর্মীদের। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায় শুক্রবার নিজে হঠাৎ হাজির হয়ে এই চিত্রই দেখলেন গঙ্গারামপুরে উলুবেড়িয়া ১ ব্লক সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের (আইসিডিএস) দফতরে। হাজিরা খাতা মহকুমাশাসকের কাছে জমা দিয়েছেন তিনি।
ব্লক শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও)-সহ এখানে রয়েছেন মোট ১৩ জন কর্মী। এ দিন বিধায়ক যখন এলেন, তখন অফিসে শুধু হাজির ছিলেন সুষমা দত্ত। তিনি বললেন, “মাসে দেড়শো টাকা বেতনে অস্থায়ী ভাবে কাজ করি।” বাকিরা কোথায়? বিধায়কের প্রশ্নের উত্তরে সুষমা বলেন, “বলতে পারব না।” আর ছিলেন শিবানী মণ্ডল। তিনি দফতরের কর্মী নন। রাঁধুনির কাজ করেন হীরাপুর পঞ্চায়েতের ১৭৯ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। তাঁর কথায়, “কয়েক দিন ছুটি নেব। সে জন্য দরখাস্ত জমা দেব। সোমবার এসেছিলাম। সে দিনও কেউ ছিলেন না। এ দিন এলাম, কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। রোজ রোজ আমার পক্ষে এত দূর থেকে আসা সম্ভব?”
দেড়টা থেকে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করেন পুলকবাবু। তার মধ্যেও কেউ হাজির হননি। শেষ পর্যন্ত হাজিরা খাতা নিয়ে তিনি চলে যান উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসকের কাছে। এর কিছু ক্ষণ পরে অবশ্য হাজির হন অনুপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে আমি নৈশপ্রহরার কাজ করি। ক্যাশিয়ার এ দিন আসতে পারেননি। তিনি ফোন করে আমাকে বললেন, “ট্রেজারি থেকে চেক আনতে হবে।” আমি তাঁকে বললাম দফতরে কে থাকবে? তিনি বললেন, সুষমাদিকে রেখে চলে যান। তাঁকে রেখেই আমাকে চেক তুলতে যেতে হয়েছিল। তার মধ্যে শুনি বিধায়ক হাজির।”
দফতরের হাজিরা খাতাটি মহকুমাশাসকের কাছে জমা দিয়ে পুলকবাবু বলেন, “ওই দফতরে আমি হানা দিতে যাইনি। আমার নিজের একটা কাজ ছিল। গিয়ে দেখি কেউ নেই। সময় মতো দফতরে আসার প্রয়োজনীয়তা মনে হয় ওই দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা ভুলেই গিয়েছেন।” মহকুমাশাসক দেবকুমার নন্দন বলেন, “বিধায়ক বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। কেন কেউ দফতরে হাজির ছিলেন না তা আমি লিখিত ভাবে সিডিপিও-র কাছে জানতে চাইব।”
সিডিপিও অনিমা মণ্ডল বলেন, “জেলায় বৈঠক ছিল। বাকি কর্মীদের অনেকেরই জেলায় প্রশিক্ষণ ছিল। এ দিন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া ছিল ক্যাশিয়ার এবং নৈশপ্রহরীর উপরে। ক্যাশিয়ার কেন আসতে পারলেন না, খোঁজ নেব।”
|