নির্বাচনের দিন জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারানো পোলিং অফিসারদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিপাকে পড়লেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ। নির্বাচনবিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে ইবোবির নামে নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকছেন বিরোধীরা।
২৮ জানুয়ারি, মণিপুরে বিধানসভা ভোট চলাকালীন চান্দেল জেলার তাপি এলাকায় বন্দুকধারী জঙ্গিরা বুথ দখলের চেষ্টা করেছিল। প্রথমেই জঙ্গিরা বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সিআরপিএফ জওয়ান ইউ ত্রিপাঠীকে গুলি করে মারে। এর পর বুথে ঢুকে এক জঙ্গি এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ১৪ বছরের একটি মেয়ে নানলিউ, প্রিসাইডিং অফিসার খ ইবোতোম্বি, পোলিং অফিসার প্রেমজিৎ, আদোন লোংমেই, থংনাম রাকেশ। প্রহরার দায়িত্বে থাকা অন্য জওয়ানরা, ওই বন্দুকধারীকে বুথের মধ্যেই গুলি চালিয়ে হত্যা করেন।
মণিপুর মন্ত্রিসভা বুধবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, নিহত চার পোলিং অফিসারের পরিবারের একজন করে যোগ্য সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। নির্বাচন ও তার আগের দিন প্রাণ হারানো তিন সিআরপি ও এক বিএসএফ জওয়ানের নিকটাত্মীয়কে রাজ্য সরকার ২ লক্ষ টাকা করে দেবে। সেই সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত আইনে সংশোধনীর প্রস্তাবও আনা হয়।
কিন্তু বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে খড়্গহস্ত। মণিপুর পিপল্স পার্টির সহ সভাপতি সানাসাম উমানন্দ বলেন, “নির্বাচনের ফল ঘোষণা না হওয়া অবধি নির্বাচনী বিধি বলবৎ থাকে। তার মধ্যেই চারটি পরিবারের সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিধি ভেঙেছেন ইবোবি।”
বিজেপির মণিপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাপির গাও মনে করছেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের অনুমতি ছাড়াই রাজ্য সরকারের এমন ঘোষণা অন্যায়। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিক।
মন্ত্রিসভার ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে, এনসিপির রাজ্য সভাপতি রাধাবিনোদ কোইজাম বলেন, “৬ মার্চ ভোট গণনা। তারপর ফল ঘোষণা, সরকার গড়ার পরে নির্বাচন বিধি উঠবে। ইবোবি তা নিশ্চয় জানেন। তা সত্ত্বেও, চটজলদি চাকরির কথা ঘোষণা করা বা স্বাস্থ্য পরিষেবা আইনে সংশোধনী আনার এত ব্যস্ততা কেন?”
মন্ত্রিসভা সূত্রে খবর, চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করার আগে, নির্বাচন কমিশন জিজ্ঞাসা করা হয়নি বটে তবে, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তা রূপায়নের জন্য ইতিমধ্যেই,কমিশনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। |