ভিএস-বিজয়ন ‘রফা’য় হস্তক্ষেপ পলিটব্যুরোর
গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে ইতি পড়ার ইঙ্গিত নেই। বিবদমান দুই শিবিরের ‘মান’ রেখে আপাত-সমঝোতার রাস্তায় শেষ হল কেরল রাজ্য সিপিএমের ২০তম রাজ্য সম্মেলন। যেখানে প্রত্যাশিত ভাবেই ফের রাজ্য সম্পাদক হলেন পিনারাই বিজয়ন। সিপিএমের যে কোনও কমিটির সম্পাদকের মেয়াদ তিন দফায় বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব দু’মাস পরে যে কেরলের মাটিতেই পার্টি কংগ্রেসে পেশ হতে চলেছে, সেই রাজ্যে বিজয়ন দায়িত্বে থাকলেন চতুর্থ বারের জন্য।
নিজে ফের রাজ্য সম্পাদকের পদে আসীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নবনির্বাচিত রাজ্য কমিটিতে বিজয়নের শিবিরেরই প্রত্যাশিত প্রাধান্য রয়েছে। তবে বিজয়নদের ‘একতরফা’ আক্রমণ থেকে বিরোধী দলনেতা তথা দলের প্রবীণতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ভি এস অচ্যুতানন্দনকে ‘রক্ষা’ করতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে পলিটব্যুরোকে।
রাজ্য সম্মেলনের প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে প্রবল আক্রমণ করা হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভি এস-কে। ওই পরিচ্ছেদটি আপাতত পলিটব্যুরোর হস্তক্ষেপেই রাজ্য সম্মেলনে গৃহীত হয়নি। ওই অংশটির ইংরেজি অনুবাদ বিবেচনা করে দেখে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। ভি এসের ক্ষোভ প্রশমন করতেই এই পদক্ষেপ বলে সিপিএম সূত্রের খবর।
তিরুঅনন্তপুরমে চার দিনের সম্মেলনের শেষ দিনে শুক্রবার রাজ্য সম্পাদকের জবাবি বক্ততার পরে নতুন রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে। তার আগে প্রতিনিধিদের বক্তব্যের শেষে বৃহস্পতিবার রাতেই রাজ্য সিপিএমের সদর দফতর এ কে জি সেন্টারে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে পলিটব্যুরোর উপস্থিত সদস্যদের বৈঠক বসে। ভি এস দাবি করেন, যে ভাবে তাঁকে নাগাড়ে আক্রমণ করা হয়েছে, তার জবাব দেওয়ার সুযোগ তাঁকে দিতে হবে। রাজ্য নেতৃত্ব সম্মেলনের রূপরেখায় ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ পরিহার করার কথা বললেও সেটাই করা হয়েছে। প্রকাশ কারাট তখন তাঁকে নিরস্ত করেন এই বলে যে, তাঁকে বলতে দেওয়া হলে যে কোনও সম্মেলনে সমালোচনার মুখে পড়ে যে কেউ বলতে চাইবেন। তা দলের রীতি নয়। পলিটব্যুরোর সদস্যদের একাংশ তখন প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদটি হিমঘরে রাখার কথা বলেন। শেষে ওই অংশটি ছাড়াই বাকি প্রতিবেদন সম্মেলনের শেষ দিনে পাশ করিয়ে নেওয়ার ‘সমঝোতা’ হয়।
কেরল সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, কয়েক মাস পরে রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় তিনটি আসন শূন্য হলে সেখানে বৃন্দা প্রার্থী হতে পারেন। আর তাই কেরল সিপিএমের দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘রফা’ করতে চেয়েছেন কারাট। বিজয়নপন্থীরা সম্মেলনে ভি এসের বিরুদ্ধে আরও ‘কঠোর শাস্তি’র (ইতিমধ্যেই পলিটব্যুরো থেকে নির্বাসিত) দাবি তুললেও তা মানেননি কারাট। আবার বিজয়নের শিবিরকেই রাজ্য কমিটিতে ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। সম্পাদক-পদের মেয়াদ বেঁধে দেওয়ার জন্য দলের গঠনতন্ত্রের যে সংশোধনী পার্টি কংগ্রেসে পেশ হবে, সেখানে সাধারণ ভাবে তিন দফার কথাই বলা হচ্ছে। কিন্তু একই সঙ্গে বলা থাকছে, রাজ্য কমিটির তিন-চতুর্থাংশের সমর্থন থাকলে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে রাজ্য সম্পাদক চতুর্থ বারের জন্য নির্বাচিত হতে পারবেন। সে সবই অবশ্য কার্যকর হবে পার্টি কংগ্রেসের পরে।
কেরল সিপিএম অবশ্য রাজ্য কমিটি ছোট করতে পারেনি। ৮৫ সদস্যের নতুন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন তেমন ৮ জন, যাঁরা নানা কারণে অভিযুক্ত ছিলেন বা রাজ্য নেতৃত্বের ‘সুনজরে’ ছিলেন না। নবাগত ১২ জনের মধ্যে আছেন আলাপুঝা, কান্নুর, পালাক্কাড় ও মলপ্পুরম জেলার চার নতুন সম্পাদক সি বি চন্দ্রবাবু, এ সি মইদিন, সি কে রাজেন্দ্রন এবং পি বাসুদেবন। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক টি ভি রাজেশ এবং প্রাক্তন ছাত্র নেতা জেমস ম্যাথু রাজ্য কমিটিতে এসেছেন। এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি পি কে বিজু রাজ্য কমিটিতে স্থান পেলেও ছাত্র সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের সেখানে জায়গা হয়নি। গোটা বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলন শেষে পলিটব্যুরো সদস্য বালকৃষ্ণন বলেছেন, “নেতাদের ভুল হয়ে থাকলে শুধরে দেওয়ার জন্যই কর্মীরা সমালোচনা করেন। কেউ-ই তো সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.