রাজারহাট, নিউটাউনে দলের ‘সিন্ডিকেট’ নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরে যে ‘অস্বস্তি’ রয়েছে, শুক্রবার ফের তা স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্য বিধানসভার সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন উত্তরবঙ্গ সফরে, তখন মহাকরণের পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে শোভনদেববাবু বলেন, “দলকে কখনও আমার জন্য অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি। আমাকে নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের খবর বেরোতে পারে। কিন্তু কখনও সিমেন্ট, সিন্ডিকেট বা কোনও দুর্নীতির খবর বেরোয়নি। এটা আমার গর্ব। এখন কারও কারও নাম জড়িয়ে এ সব খবর বেরোচ্ছে এবং দল অস্বস্তিতে পড়ছে। তাঁদের নৈতিক দায়িত্ব, এ সব খবরের প্রতিবাদ করা।”
 তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ধারণা, নাম না করলেও শোভনদেববাবুর এই ‘কটাক্ষে’র লক্ষ্য রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও তাঁর অনুগামী, দলের শ্রমিক সংগঠনের (আইএনটিটিইউসি) নেতৃত্ব। পূর্ণেন্দুবাবু রাজারহাটের বিধায়ক। তিনি অবশ্য এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মহাকরণে দাঁড়িয়ে শোভনদেববাবু বিতর্কিত মন্তব্য না করলেই ভাল করতেন।”
আইএনটিটিইউসি-র সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে শোভনদেববাবুকে সরিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শোভনদেববাবুর অনুগামীদের অভিযোগ, তাঁকে ‘অপসারণে’র মূলে রয়েছেন পূর্ণেন্দুবাবুরা। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন নাম না করে পূর্ণেন্দুবাবুদের বিরুদ্ধে বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেববাবু তোপ দেগেছেন বলে দলের একাংশের অভিমত।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে কাজ ছিল বলে তিনি এ দিন মহাকরণে গিয়েছিলেন বলে শোভনদেববাবু জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, যে সব কর্মী ইউনিয়নে তিনি নেতৃত্ব দেন, সেগুলি তেমনই চলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারও মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছিল। তাঁর অনুগামীরা যাতে ‘বিভ্রান্ত না হন’ সেই কারণেই বৈঠকের কথা তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। শোভনদেববাবুর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে বলেছেন,‘আপনি যে সব জায়গায় সভাপতি রয়েছেন, যেমন কাজ করছেন, তেমনই চালিয়ে যান।’ ফলে কোনও সমস্যা নেই।” তারাতলায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে শোভনদেববাবু বলেন, “আশা করব, মুখ্যমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবেন।” |
