খাতায়-কলমে ‘নিয়ম’ তাপ্পি-মারা অর্থাৎ ‘রিসোল্ড’ চাকা লাগিয়ে কোনও গাড়িই রাস্তায় চলতে পারবে না। না-মানলে চালকদের জরিমানা দিতে ‘বাধ্য’ করা হয় বলেও দাবি পুলিশের। আবার আইন বলছে তাপ্পি মারা চাকার জন্য একাধিক বার জরিমানা করা গেলেও গাড়ি বাজেয়াপ্ত বা চালককে গ্রেফতার করা যাবে না। আইনের এই ‘ফাঁক’ গলেই নিয়ম বেনিয়ম হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে রিসোলিং-এর রমরমা। তাপ্পি মারা চাকার গাড়ি দুর্ঘটনাও ঘটাচ্ছে। শুক্রবার মাঝেরহাট ব্রিজের রেলিং ভেঙে একটি লরির বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে থাকার ঘটনা যা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। |
পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিকল্স বিধির ৯৪ নম্বর ধারায় ‘রিসোলিং’ মাত্রেই বেআইনি। ১৭৭ নম্বর ধারায় তার জরিমানা ১০০ টাকা। অন্য দিকে, ‘নিরাপদ নয়’ এমন গাড়িকে জরিমানা করা হয় পশ্চিমবঙ্গ মোটর ভেহিকলস আইন-এর ১৯০ (১) ও (২) ধারায়। যে সব গাড়ির চাকা তাপ্পি-মারা, সেগুলির চালককে প্রায়শই এই ধারায় জরিমানা (৭৫০ টাকা) করা হয়। কিন্তু পথচারী-চালক-আরোহীদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা বলছে, জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যান চালকেরা। তাই তাপ্পি মেরে গাড়ি ছোটানোর ‘প্রবণতা’ও দীর্ঘ দিনের।
পুলিশ এবং মোটর ভেহিকল্স দু’টি দফতরেরই বড় অংশ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, আইনে তাপ্পি মারা গাড়ির চালককে জরিমানা করা গেলেও গাড়ি বাজেয়াপ্ত বা চালকের লাইসেন্স বাতিল করা যায় না। ট্রাফিককর্মীরা জানান, একই গাড়িকে তাপ্পি-মারা চাকার জন্য একাধিক বার জরিমানা করা গেলেও চালককে গ্রেফতারও করা যায় না। ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ঢিলেঢালা’ থাকে মোটর ভেহিকল্সও। অথচ তাপ্পি-মারা চাকার গাড়ি দ্রুত চললে দুর্ঘটনায় পড়তে পারে, এ কথা মানেন সকলেই। পুলিশের দাবি, লোকাভাবে তাপ্পি মারা চাকার গাড়িকে জরিমানার কাজও বহু ক্ষেত্রে ধাক্কা খায়।
তা হলে কী চলতেই থাকবে ‘রিসোলিং’-এর রমরমা?
পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র এ দিন বলেন, “পুলিশ বা মোটর ভেহিকল্স দফতর কারও পক্ষেই কেন্দ্রীয় আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। আইন পরিবর্তনের ব্যাপারে কী করা যায়, তা বিধানসভাতেও আলোচনা করব।” |