বড়দিন বা ক্রিসমাস উৎসব শান্তির দূত রূপে পরিচিত। প্রতিবছর ক্রিসমাস উপলক্ষে প্রকাশিত একগুচ্ছ রঙিন ডাকটিকিট এখন এই উৎসবের এক অবশ্য অনুষঙ্গ।
বিশ্বের প্রথম ক্রিসমাস ডাকটিকিট প্রকাশ করে কানাডার ডাকবিভাগ, ১৮৯৮ সালে। তবে অনেকে একে ক্রিসমাস ডাকটিকিট বলে মানতে রাজি নন। কারণ, এই ডাকটিকিটে ‘XMAS1898’ কথাটি লেখা থাকলেও তার মূল নকশায় আদতে একটি মানচিত্রের ছবি ছিল। ১৯১৭ সালে আমেরিকার দু’টি ক্রিসমাস ডাকটিকিট সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছিল। ইতালির শিল্পী জর্জিয়োর আঁকা বিখ্যাত ছবি ‘মেষপালকের উপাসনা’-র নকশায় মুদ্রিত হয়েছিল। ১৫১০ সালে আঁকা আসল ছবিটি বর্তমানে ওয়াশিংটন আর্ট গ্যালারির শোভাবর্ধন করছে।
এর পর থেকেই দেশ-বিদেশে ক্রিসমাস ডাকটিকিট প্রকাশের রেওয়াজ শুরু হয়ে যায়। এই সব ডাকটিকিটে এই উৎসবের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান, সাজসজ্জার ধরন-ধারণ যেমন ধরা পড়েছে, তেমনি উৎসবের বিচিত্র উপাদান, যেমন সুসজ্জিত চার্চ, সান্তা ক্লজ, ক্রিসমাস ট্রি, পবিত্র ঘণ্টা, পরী, প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি প্রভৃতিও সমান ভাবে উপস্থিত। যিশুর জন্ম ও আবির্ভাবের মুহূর্তও বিভিন্ন আঙ্গিকে স্থান পেয়েছে। ছোট্ট যিশুকে দেখানো হয়েছে মাতা মেরি ও যোশেফের সঙ্গে।
১৮১৬ সালে অস্ট্রিয়ার সেন্ট নিকোলাস চার্চে রচিত ‘সাইলেন্ট নাইট, হোলি নাইট’ নামক ক্রিসমাস ক্যারলটি। প্রথম গাওয়া হয় ১৮১৮ সালে। এখন বিশ্বের প্রায় সব ভাষাতেই গাওয়া হয়ে থাকে। এই গানের চিত্ররূপ বিধৃত হয়েছে ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত নিউজিল্যান্ডের তিনটি ডাকটিকিটে।
১৯৭৭ সালে প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ার ডাকটিকিটে একটি মজার জিনিস লক্ষ্যণীয়। ক্রিসমাস উৎসবের পিতা রূপে পরিচিত সান্তা ক্লজকে এখানে সমুদ্রে সার্ফ বোর্ড চড়ে আসতে দেখা যায়। তাঁকে আমরা সাধারণত উত্তরমেরুর তুষারাবৃত অঞ্চলে স্লেজগাড়িতে দেখতেই অভ্যস্ত। আসলে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস উৎসবের সঙ্গে এই দৃশ্য সুপ্রযোজ্য ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ, ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য সেখানে তখন ভরা গ্রীষ্ম।
|