উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার জেরে কোচবিহারের বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষে ৯ ছাত্রছাত্রী ফল প্রকাশের এক মাস পরেও মার্কশিট পায়নি। ফলে তাঁরা পাশ করেছেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশায়। দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি বা পড়া শুরু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে না-পারায় চিন্তায় পড়েছেন পরীক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে কলেজ। সমস্যা তৈরি হয়েছে কলেজের স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত বর্ষের ৫০ পরীক্ষার্থীর পুনর্মূল্যায়নের ফল ও কলেজে এম এ, এম কম কোর্স চালুর দাবিও ঝুলে থাকার ঘটনায়। কলেজের অধ্যক্ষ মলয় সরকার বলেন, “স্নাতক প্রথম বর্ষের কয়েকজন পরীক্ষার্থীর মার্কশিট না আসায় ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। দু’বার ওই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। আখেরে কিছু হয়নি। চূড়ান্ত বর্ষের অনেকের পুনর্মূল্যায়নের আবেদনেরও ফলও আসেনি। এ সবের জন্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা মেটাতে দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগী হওয়া দরকার।’’ নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম বর্ষের ফল প্রকাশ হয়। ৯ পরীক্ষার্থীর ফল জানানো হয়নি। একমাস পেরিয়ে গেলেও তাদের কেউ মার্কশিটও পাননি। অথচ কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ভর্তি ৭ ডিসেম্বর শেষ হয়ে গিয়েছে। কলেজের ছাত্রছাত্রী সংসদের সম্পাদক রাজীব কর্মকার বলেন, “৭ ডিসেম্বর ভর্তির সময়সীমা শেষ হয়েছে। মার্কশিট না আসায় ৯ জনের কেউ ভর্তি হতে পারেনি। ৫০ জন চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার্থী আবেদনের দুমাস পেরোলেও পুনর্মূল্যায়নের ফল জানতে না পারায় বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উচ্চশিক্ষায় ভর্ত্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কলেজে এমএ, এম কম পাঠ্যক্রম চালুর বিষয়টিও ঝুলে রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের অনেকেরই অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিরতাই সামগ্রিক পরিস্থিতির জন্য দায়ী। ভুক্তভোগীদের এক জন রাকেশ অধিকারী বলেন, “কষ্ট করে পড়াশুনো করে পরীক্ষা দিয়ে মার্কশিট পেতে এমন হয়রানি, অনিশ্চয়তা পোহাতে হবে ভাবিনি। ভর্তি, পড়াশুনোর কী হবে ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি না। নিশিগঞ্জের বাড়ি থেকে ফল কবে পাব তা জানতে কলেজে দৌড়োদৌড়ি করতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠেছি।’’ ওই কলেজের আর এক পরীক্ষার্থী শুভাশিস দে বলেন, “বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষে পাশ করেছি কি না জানি না। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভাবলে এমন দিন দেখতে হত না।’’ |