উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের জেরে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের মাসিক উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতুল মর্যাদা থাকায় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন উপাচার্য নিজেই। কমিটির আহ্বায়ক পদে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে। এ ছাড়াও কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, টিচার্স কাউন্সিলের সদস্য ও কলেজের কর্মী মিলিয়ে ৪ জন কমিটিতে রয়েছেন। কলেজের উন্নয়ন, প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করতে উপাচার্যের উপস্থিতিতে মাসিক অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকে নানা সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্য নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে না পারায় গত ৮ জুনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজে অ্যাডভাইসারি কমিটির বৈঠক ডাকেননি। বৈঠক না হওয়ায় ৬ মাস ধরে উন্নয়নমূলক কাজ আটকে গিয়েছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার বলেন, “অফিসে ঢুকতে পারছি না। মিটিং ডাকব কোথায়?” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অভিযোগ, গত একমাস ধরে সমস্যার কথা জানানো হলেও বৈঠকের ব্যবস্থা হচ্ছে না। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠক না ডাকলে টানা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে ছাত্র সংসদ। ওই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের প্রসেনজিত সাহা বলেন, “১৮০ কিমি দূরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে হয়। কলেজ চত্বরে বৈঠকের আর্জি মানা হয়নি। তিন বছর ধরে ওই বৈঠক অনিয়মিত। এখন উপাচার্য নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে না-পারায় মাসিক বৈঠক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বৈঠক ডাকা না হলে আন্দোলনে নামা হবে বলে অধ্যক্ষকে জানিয়েছি।” এসএফআইয়ের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকার বলেন, “চেয়ারম্যান হিসাবে তো উপাচার্যের উচিত কলেজে গিয়ে অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়া। বৈঠক না হওয়ায় কলেজের নানা সমস্যার কথা আমরা রাজ্যপালকে জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ চাইব।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা পর্যবেক্ষক প্রিয়ব্রত দুবে বলেন, “শীঘ্র যাতে কলেজের অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠক ডাকা হয় তার জন্য উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।” জুন মাসের পর থেকে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক না হওয়ায় কলেজের ৪ শিক্ষকের পদোন্নতি, নবনিযুক্ত ৫ শিক্ষকের স্থায়ীকরণ আটকে গিয়েছে। বিএ পার্ট ওয়ান, পার্ট টু ও পার্ট থ্রির অনার্স এবং পাস কোর্সের ৫০ জন পড়ুয়ার ফল প্রকাশিত হচ্ছে না। কলেজের তহবিলের ৫ লক্ষ টাকায় জেনারেটর কেনা সম্ভব হচ্ছে না। রায়গঞ্জের বিধায়কের তহবিল থেকে বরাদ্দ ৫ লক্ষ টাকায় নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। গ্রন্থাগার, সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি, ক্লাস রুমের সংস্কারের কাজ আটকে রয়েছে। রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকার বলেন, “কলেজের উন্নয়নমূলক কাজ আটকে গিয়েছে। সমস্যার কথা একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” |