কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
নজরবন্দি ডিন ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার
ছাত্র আন্দোলনের জেরে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার সফিয়ার রহমান ও হর্টিকালচার বিভাগের ডিন হিমাদ্রি ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পিএইচডি-এর জন্য আবেদনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে ওই দু’জনকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন একদল ছাত্র। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি নিবাসে তাঁদের ‘নজরবন্দি’ করে রাখা হয়। শুক্রবার রাতেও তাঁরা নজরবন্দি ছিলেন।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, “কবে থেকে পিএইচডি-র জন্য আবেদন করা যাবে সেই ঘোষণা করতে হবে। তার পরেই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে।” কিন্তু ডেপুটি রেজিস্ট্রার জানান, উপাচার্যের সিদ্ধান্ত ছাড়া আবেদনের তারিখ বলা সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “ছাত্র প্রতিনিধি, উপাচার্যকে নিয়ে বসে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।”
কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
সম্প্রতি সেমেস্টার পরীক্ষায় গরহাজিরদের জরিমানা প্রত্যাহার, ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন ঘোষণা, পূর্বতন ছাত্র সংসদের খরচের অডিট-সহ একাধিক দাবিতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কালীপুজোর পর থেকে ওই সংগঠনের হাতে দফায় দফায় ঘেরাও হওয়ার পরে উপাচার্য অসিত দাস দফতরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে, সব কাজকর্মও বন্ধ।
শুক্রবার সকালে রেজিস্ট্রার ও ডিনকে আন্দোলনকারীরা পাহারা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে নিয়ে যান। সেখানে ফের দু’জনকে ঘেরাও করে রাখা হয়। হর্টিকালচার বিভাগের ডিন বলেন, “স্নান-খাওয়া করতে পারলেও নজরবন্দি থাকায় বাড়ি যেতে পারছি না।’’ কর্মচারী সংসদের সভাপতি তপন সাহা জানান, উপাচার্য অফিসে না আসায় বহু কাজ আটকে রয়েছে। সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত। ইউনিভার্সিটি টিচার্স কাউন্সিলের সহকারী সম্পাদক সুনীল ঘোষ বলেন, “উপাচার্যের ব্যর্থতায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আমরা তাঁর অপসারণ চাইছি।’’
আলোচনা উত্তরে

মানিক ভট্টাচার্য, রাজ্য উচ্চ শিক্ষা
বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য

দেবকুমার মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক,
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পরিষদ
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় ব্যাপারে আমরা
ওয়াকিবহাল। আমরা মনে করি, উপাচার্যের মেয়াদ বৃদ্ধি
যখন করা হয়েছে, তাঁকে কাজ করতে দিতেই হবে।
কর্মসমিতি, কোর্ট গড়ার প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে
সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে
হবে। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।
কর্মনাশা আন্দোলন মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
ছাত্রদের অসম্পূর্ণ ফলের সমস্যার সমাধান
না হওয়ায় অধ্যক্ষরা জটিল পরিস্থিতির
মুখে। কামাখ্যাগুড়ি কলেজের ছাত্ররা
অনশনে বসার হুমকি দিয়েছে। ওই
অশান্তির জন্য কে দায়ী থাকবে।


দিগ্বিজয় দে সরকার, শিক্ষাবিদ,
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাণেশ্বর কলেজ

দেবপ্রসাদ রায়,
বিধায়ক
শাসক দলের দ্বিধাগ্রস্ততায় জট
খোলা যাচ্ছে না। প্রতিবাদ, আন্দোলন হতেই
পারে। কাজকর্ম বন্ধ করে দিনের পর দিন
তা চলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট
সকলের হয়রানি হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে
আনতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা বলেছি।
উনি সমস্যা নিরসনে সকলকে নিয়ে বৈঠক করবেন
বলে জানিয়েছেন। যেভাবেই হোক এই অচলাবস্থা কাটাতে
হবে। শিক্ষার অঙ্গনে স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকলে
সমাজেরই ক্ষতি। শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।


প্রদীপ মণ্ডল, আহ্বায়ক,
অলবেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন

সুব্রত পঞ্চানন, অধ্যক্ষ,
আলিপুরদুয়ার কলেজ
উপাচার্য অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে
অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এর পরিবর্তনে উপাচার্যকে
সরাতে হবে। নতুন সরকার প্রেসিডেন্সিকে সেন্টার
অফ এক্সেলেন্স করার কথা ঘোষণা করেছে। উত্তরবঙ্গ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে উপাচার্যকে সরিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাক।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই পারে।
তা নিয়ে তদন্ত হোক। অচলাবস্থা চলতে
থাকায় ছাত্রছাত্রীদের হয়রানি হচ্ছে। আমাদের
কলেজের কিছু রেজাল্টে সমস্যা রয়েছে। আন্দোলনের
জেরে তা সংশোধন করতে দেরি হচ্ছে।


সমর চৌধুরী, নাট্যকার

সত্তরের দশকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মাসের পর মাস অচল রাখা হয়েছিল। উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে
ঢুকতে বাধা দেওয়া মানে তো শিক্ষাকেই বির্সজন দিয়ে দেওয়া। কবে আমরা সাবালক হব! কবেই
বা সকলে জোট বেঁধে বলব, শিক্ষাকে অবরুদ্ধ করা যাবে না।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ছাত্রদের ঘেরাওয়ের রাস্তা বেছে নিতে উপাচার্য বাধ্য করেছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক বরুণ দত্ত বলেন, “আমরা ঘেরাওয়ের বিরোধী। শুক্রবার যাঁরা ওই আন্দোলন করছেন তাঁরা সবাই সাধারণ ছাত্র। উপাচার্য আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে চাইলে স্বাগত জানাব।’’ এ দিন সন্ধ্যায় উপাচার্য ফোন ধরেননি। তাঁর বাড়ির কেউ এক জন বলেন, “স্যার অসুস্থ, রক্তচাপ বেড়েছে। এখন কথা বলার অবস্থায় নেই।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.