উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
কর্মী-আন্দোলন না উঠলে অনশনের হুমকি ছাত্রদের
রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের ‘চেষ্টা’ সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অফিসে ঢুকতে না-দেওয়ার দাবিতে কর্মচারী সমিতি আন্দোলনে অনড়। এতে দেড় লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে।
পড়ুয়াদের একাংশ হুমকি দিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হলে তাঁরা কলেজের সামনে অনশনে বসবেন। যাঁরা অনশনের হুমকি দিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশের পরীক্ষার ফল পুনর্মূল্যায়ন ও মার্কশিট সংক্রান্ত কাজ আন্দোলনের জেরে থমকে রয়েছে।
উচ্চ শিক্ষা দফতরের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে, আন্দোলন প্রত্যাহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর উপরে জোর দিয়েছেন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আজ, শনিবারের মধ্যে আলোচনার দিনক্ষণ ঠিক করা হতে পারে। উপাচার্য অরুণাভ বসুমজুমদার বলেন, “দাবি-দাওয়া ও অন্যান্য সমস্যা আলোচনায় মিটতে পারে।”
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী সমিতির বিক্ষোভ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
তবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবীপ্রসাদ বুট জানান, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি না-সরলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না। দেবীপ্রসাদবাবুর বক্তব্য, “উপাচার্যকে না-সরানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” এ দিন শিলিগুড়িতে রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা বিষয়ক কমিটির সদস্য মানিক ভট্টাচার্য বলেছেন, “কর্মসমিতি, কোর্ট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” এ দিকে, জলপাইগুড়িতে দলীয় কাজে যোগ দিতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্য সরকারকে ‘সক্রিয়’ হওয়ার অনুরোধ করেছেন।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির অধ্যক্ষ পরিষদের সম্পাদক দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর্মনাশা আন্দোলনের জেরে ছাত্রেরা অনশনে বসার হুমকি দিয়েছে। এপ্রিলে ৬২টি কলেজের পরীক্ষা নিয়েও অনিশ্চয়তা বাড়ছে।” কলেজ কলেজে অনশন-আন্দোলন শুরু হলে অশান্তি বাড়বে বলে তাঁর আশঙ্কা। কামাখ্যাগুড়ি কলেজের তিন ছাত্র ধনঞ্জয় রায়, মলয় দাস ও অমল সরকার একই সুরে বলেন, “আন্দোলনের জেরে রেজাল্ট হাতে পাচ্ছি না।”
নানা অনৈতিক কাজের অভিযোগে প্রায় দেড় মাস ধরে তাঁর অফিসের সামনে সমিতি অবস্থান-বিক্ষোভ করায় উপাচার্য ঢুকতে পারছেন না। উপাচার্য জানিয়ে দিয়েছেন, এই নিয়ে সরকার তদন্তের সিদ্ধান্ত নিলে তাঁর আপত্তি নেই। উল্লেখ্য, অরুণাভবাবু উপাচার্য হওয়ার পরে পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগের প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসেবে গরমিলের অভিযোগে পুলিশের কাছে রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকার-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। আগাম জামিন পেলেও এখনও দিলীপবাবু অফিসে ঢুকতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, যেহেতু দেড় বছরেও মামলাটির চার্জশিট হয়নি, তাই অরুণাভবাবু সরলেই তা ধামাচাপা পড়তে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে রেজিস্ট্রার দিলীপবাবু বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় আমাকে অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ওঁর (উপাচার্য) বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে উনি অফিসে বসবেন কেন? এটাও ভাবা দরকার।”
প্রতিক্রিয়ায় উপাচার্য জানান, দিলীপবাবু পরীক্ষা নিয়ামক থাকাকালীন হিসেবে গরমিল হয়েছে বলে স্পষ্ট অভিযোগ থাকায় তৎকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ সাপেক্ষে মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমার বিরুদ্ধে তো কোনও তদন্ত এখনও হয়নি। যাই হোক, দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে তার দ্রুত চার্জশিট হওয়া দরকার।” পাশাপাশি, উপাচার্য এ দিনও আচার্য তথা রাজ্যপাল ও উচ্চ শিক্ষা দফতরের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.