রবীন্দ্রনাথের অপ্রকাশিত রচনাগুলি রবীন্দ্র রচনাবলিতে সংকলিত হবে কি না, শুক্রবার টাউন হলে সেই প্রশ্ন উঠল সরকারি রবীন্দ্র রচনাবলির প্রকাশ অনুষ্ঠানে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করুণাসিন্ধু দাস এই বিষয়ে প্রস্তাব দেন। তবে, রচনাবলির সম্পাদকমণ্ডলীর পক্ষে তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি এ দিনের মঞ্চে। এর আগে বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত দু’টি এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে প্রকাশিত দু’টি রচনাবলিতেও রবীন্দ্র-রচনার প্রকাশ সম্পূর্ণ হয়নি।
মহাকরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পরে এই দফার রবীন্দ্র রচনাবলি প্রকাশের জন্য নতুন করে সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি হয়। তারই উদ্যোগে এ দিন সার্ধশতজন্মবর্ষ সংস্করণ রচনাবলির প্রথম খণ্ডটি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেন, রবীন্দ্ররচনা আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার আঞ্চলিক ভাষায়। সেই লক্ষ্যে রাজ্য সরকার আরও বেশি করে কাজ করবে। তাঁর ঘোষণা, ‘‘এই কাজটা আমি শুরু করতে চাই পাহাড় ও জঙ্গলমহল থেকে। যাতে পাহাড়ের মানুষ তাঁদের নিজেদের ভাষায় রবীন্দ্রনাথের রচনা পড়তে পারবেন, সাঁওতালিরা পড়বেন অলচিকি লিপিতে।” |
প্রধান অতিথি, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন তাঁর ভাষণে চিন্তাবিদ ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথের রচনার আরও বেশি করে প্রচারের উপরে জোর দেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বভারতী-র উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত, রবীন্দ্রভারতী-র উপাচার্য করুণাসিন্ধু দাস, রচনাবলি-সম্পাদকমণ্ডলীর মুখ্য উপদেষ্টা সব্যসাচী ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, এর আগে সরকারি উদ্যোগে রবীন্দ্র-রচনাবলি প্রকাশিত হয়েছে দু’বার রবীন্দ্রনাথের জন্মের শতবর্ষ ও ১২৫ বছরে। এই তৃতীয় রচনাবলি সে দু’টির থেকে অনেকটাই আলাদা বলে তাঁর স্বাগত ভাষণে জানান সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি শাঁওলী মিত্র। তিনি জানান ১৭ খণ্ডে পরিকল্পিত এই রচনাবলির মূল ভিত্তি রবীন্দ্রনাথের জীবনকালে প্রকাশিত শেষ সংস্করণ। তা ছাড়া রবীন্দ্রনাথ তাঁর রচনায় নানা সময়ে যে সব পরিবর্তন ঘটিয়েছেন সেগুলিও এই রচনাবলির পরিশিষ্টে ধরা থাকবে বলে তিনি জানান। এই রচনাবলিও আগের সরকারি রচনাবলিগুলির মতোই কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ইত্যাদি ক্রমে বিন্যস্ত হবে। শুক্রবার প্রকাশিত প্রথম খণ্ডটিতে ‘সন্ধ্যাসংগীত’ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথের মোট ১৩টি কাব্যগ্রন্থ সংকলিত হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সূত্রে খবর, পঁচিশে বৈশাখ, বাইশে শ্রাবণ ও সাতই পৌষ রবীন্দ্রজীবনের এই তিনটি তাৎপর্যপূর্ণ দিনে এই রচনাবলির খণ্ডগুলি প্রকাশ করার চেষ্টা করা হবে। এর আগের সরকারি রচনাবলি প্রকাশে যে দীর্ঘসূত্রতা ছিল তা যাতে এ বার না থাকে, লক্ষ রাখা হচ্ছে সে দিকেও। শাঁওলী মিত্র জানিয়েছেন, যাঁরা এই রচনাবলির গ্রাহক হয়েছেন প্রথম খণ্ডটি তাঁদের দেওয়া হবে আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে।
সুতরাং নতুন বছরে রবীন্দ্রনাথ আবারও, নব রূপে। |