ফেল করে বাড়ি পালানো ছাত্রকে ফেরালেন যুবক
রীক্ষায় ফেল করলে আর পড়াশোনা নয়, চায়ের দোকানে কাজে লাগিয়ে দেবেন বলেছিলেন ছেলেকে। কিন্তু তার ফল যে এমনটা হবে ভাবতে পারেননি উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার হিজলপুকুরের বাসিন্দা শ্যামল ও অপর্ণা দাস। তাই শুক্রবার যখন ছেলে শুভজিৎকে তাঁদের হাতে তুলে দিলেন বাগদার রানিহাটির বাসিন্দা অহিতেশ বিশ্বাস, তখন স্বস্তি ও আনন্দে ভিজে গিয়েছিল বাবা-মায়ের চোখ।
পুলিশ ও দাস পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবরার হিজলপুকুর এলাকার বাসিন্দা শ্যামল দাসের ছোট ছেলে শুভজিৎ হাবরা হাইস্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র। পরিবার সূত্রেই জানা গিয়েছে এর আগে কোনও পরীক্ষায় ফেল করেনি শুভজিৎ। তাহলে এ বার কেন এমন কথা ওকে বললেন? উত্তরে মা অপর্ণাদেবী বলেন, “ইদানীং ও মন দিয়ে পড়ছিল না। পরীক্ষাও তেমন ভাল হয়নি। যাতে এরকম না করে সে জন্য ভয় দেখাতেই বলেছিলাম, ‘ফেল করলে আর পড়াব না। চায়ের দোকানে কাজে লাগিয়ে দেব’।”
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শুভজিৎকে নিয়ে স্কুলে রেজাল্ট আনতে গিয়েছিলেন। ছেলে স্কুলের ভিতরে ঢুকে গেলে তিনি গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। রেজাল্ট নিয়ে অন্য ছাত্রেরা এক এক করে বাইরে বেরিয়ে এলেও শুভজিৎ বেরোচ্ছিল না। ছেলের দেরি দেখে কী হচ্ছে জানতে তিনি স্কুলের ভিতরে যান। কিন্তু ক্লাসে শুভজিৎকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। জানতে পারেন ছেলে বাড়িতেও ফেরেনি। কোনও আত্নীয়ের বাড়িতেও যায়নি। এর পরে তাঁরা হাবরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
শুভজিৎকে যিনি উদ্ধার করেছেন সেই অহিতেশবাবু পুলিশকে জানান, তিনি বাগদার রানিহাটি এলাকায় থাকেন। বারাসতে এক আইনজীবীর অধীনে কাজ করেন। একটি মামলার কাজে হাসনাবাদ যাবেন বলে তিনি বারাসত স্টেশনে আসেন। হঠাৎ দেখেন প্ল্যাটফর্মে বসে একটি ছেলে কাঁদছে। তার সঙ্গে কেউ নেই। পরনে স্কুলের ইউনিফর্ম। তিনি জিজ্ঞাসা করে জানতে পারেন তার নাম শুভজিৎ। কাঁদার কারণ জানতে চাইলে শুভজিৎ বলে, “পরীক্ষায় ফল খারাপ হয়েছে। মা বকেছে। তাই আর বাড়ি ফিরব না’। ইতিমধ্যে ট্রেন এসে যাওয়ায় তিনি ট্রেনে উঠে পড়েন। হাসনাবাদে গিয়ে কাজ সেরে সেখানে একটি হোটেলে তাঁরা রাত্রিবাস করেন। অনেক করে শুভজিৎকে বোঝান। কিন্তু শুভজিৎ বাড়ি ফিরতে অস্বীকার করে। অহিতেশবাবু বলেন, “শুক্রবার সকালে অনেক বুঝিয়ে ওকে নিয়ে মছলন্দপুরে আসি। কিন্তু ও জানায়, ‘মা বলেছে বাড়ি ফিরলে আমার মরা মুখ দেখবি’। তখন ওকে বলি এটা মায়ের মনের কথা নয়। তুই বাড়ি ফিরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এর পরে ওকে নিয়ে গিয়ে ওর বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিই।”
এ দিন ছেলেকে ফিরে পাওয়ার পরে অহিতেশবাবুকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না শুভজিতের বাবা-মা। অপর্ণাদেবী বলেন, “কী বলে যে ওঁকে ধন্যবাদ দেব। উনি আমাদের কী উপকার করলেন তা ভগবানই জানেন। কখনও ওকে কাছছাড়া করিনি। পরীক্ষার খারাপ ফল করবে ভেবে বকাবকি করেছিলাম। তাই বলে এমনটা করবে ভাবিনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.