|
|
|
|
শুরুই হয়নি লোকো ট্রেনিং সেন্টারের কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
দেখতে দেখতে বছর ঘুরেছে। কিন্তু শিলান্যাসই সার। খড়্গপুরে লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টারের কাজ শুরুই হয়নি এখনও। প্রস্তাবিত জায়গায় শুধু একটা সাইনবোর্ড লাগানো। বিরোধীদের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শুধু একের পর এক প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। কাজ হয়নি অধিকাংশেরই। তেমনই একটি এই ‘লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টার’। খড়্গপুরের ডিআরএম রাজীব কুমার কুলশ্রেষ্ঠ ‘ট্রেনিং সেন্টারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন’ বলেই প্রসঙ্গ এড়িয়েছেন। তবে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলেরই এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, প্রকল্পটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এর জন্য কত ব্যয় হবে, কী কী তৈরি হবে, তা-ও নির্দিষ্ট। সব দিক খতিয়ে দেখে দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।
রেলকে কেন্দ্র করেই খড়্গপুর শহরের পরিধি বেড়েছে। চাকরির সূত্রে ভিন্ রাজ্যের বহু মানুষও এই শহরের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন। এখানে রেলের বেশ কয়েকটি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই শহরেই একটি অ্যাডভান্সড্ লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। তৈরি হয় পরিকল্পনা। শহরের চাঁদমারি এলাকায় রেলের বেশ কিছুটা জমি রয়েছে। এখানেই পাইলট ট্রেনিং সেন্টার গড়ে ওঠার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০১০ সালের অক্টোবরে প্রস্তাবিত প্রকল্পের শিলান্যাসও হয়।
এই উপলক্ষে ঘটা করে অনুষ্ঠানও হয় রেলশহরে। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে সে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা। ছিলেন খড়্গপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান জহরলাল পালও। বস্তুত, ওই অনুষ্ঠানে সিপিআই সাংসদকে আমন্ত্রণ জানিয়েই বামপন্থীদের রেলের অনুষ্ঠানে ডাকা হয় নাএই বিতর্কে দাঁড়ি টানার চেষ্টা করেছিলেন মমতা। এক বছর আগের সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রেলের উন্নয়ন-কাজে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছিলেন সিপিআই সাংসদ। |
|
শিলান্যাসের বছর পার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল |
কিন্তু, বছর ঘুরতেই সিপিআই সাংসদের সমালোচনার মুখে তৎকালীন রেলমন্ত্রী তথা অধুনা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শুধু লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টার কেন? এমন কত প্রকল্পেরই শিলান্যাস হয়েছে, কিন্তু কাজ সে ভাবে এগোয়নি। চমক সৃষ্টির জন্যই সেই সময়ে একের পর এক প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল। মানুষ সব দেখছেন।” তৃণমূল নেতা তথা খড়্গপুরের পুরপ্রধানের পাল্টা বক্তব্য, “উন্নয়নের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে দেখেই বামেরা অপপ্রচার করছে। গত ৩৪ বছরে রাজ্যে অনেক শিলান্যাসই করেছে বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু, সেই সব শিলা ধুয়ে গিয়েছে। এখন তা হচ্ছে না।” তাঁর কথায়, “কয়েকটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে কিছু সময় তো লাগবেই।”
রেল সূত্রে খবর, চাঁদমারি এলাকার প্রস্তাবিত জমিতে মোট দু’টি ভবন গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ১৮০০ বর্গমিটার জমিতে একটি দোতলা ট্রেনিং সেন্টার থাকবে। আর, ২০০০ বর্গমিটার জমিতে একটি তিনতলা হস্টেল তৈরি হবে। যাঁরা ইঞ্জিন চালানোর প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁদের থাকার জন্যই এই হস্টেল। সব মিলিয়ে ৯০ জন এখানে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। ট্রেনিং সেন্টারের মধ্যে ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, কম্পিউটার রুম থাকবে। ডিজেল-ইলেকট্রিক, দু’ধরনের ইঞ্জিন চালানোরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেই মতোই ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সব পরিকল্পনা কবে বাস্তবায়িত হয়, এখন সেটাই দেখার। অপেক্ষায় রেলশহর। |
|
|
|
|
|