হাতির তাণ্ডব শালবনির গ্রামে
হাতির হানায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শালবনির সোনাকড়া গ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির দল গ্রামে ঢুকে পড়ে। ধানের গাদা উল্টে, ধান খেয়ে, মাড়িয়ে নষ্ট করা ছাড়াও বাড়িঘর ভেঙে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় তারা। বিপর্যস্ত এবং আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালেই অবশ্য বন দফতরের কর্মীরা গ্রামে হাজির হন। এ দিন থেকেই হাতি তাড়াতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর।
দলমা থেকে আসা হাতির দল বেশ কিছুদিন ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মূলত, দু’টি ভাগে এই হাতিগুলি ঘুরছে। একটি দলে রয়েছে ২৫টি হাতি। অন্য দলে প্রায় ১০০টি হাতি। ১০০টি হাতি রয়েছে যে দলে, সেই পালটিই কয়েক দিন ধরে ভাদুতলা, সোনাকড়া এলাকার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এখন মাঠে ধান নেই। মাঠ থেকে ধান কেটে নিয়েছেন চাষিরা। চাষি-বাড়ির সামনে সেই ধান এখন গাদা দেওয়া রয়েছে। বন দফতর জানিয়েছে, মাঠে খাবার না পেয়েই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হাতির দল গ্রামে হানা দেয়। গাদা করা ধান খেয়ে, মাড়িয়ে নষ্ট করে। অনেকে আবার ধান ঝেড়ে তা বস্তায় করে রেখেছেন বাড়িতে। সেই গন্ধে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে হাতিরা শুঁড়ে করে সে সব বস্তাও বের করে।
হাতির হানায় ঘরবাড়ি তছনছ সোনাকড়া গ্রামে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
একে রাত, তার উপরে খুব ঠান্ডাও পড়েছে। আচমকা গ্রামে হাতির হানায় হতচকিত হয়ে পড়েন মানুষজন। তার মধ্যেই কয়েক জন হাতি তাড়ানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু তাড়াবেন কী করে! স্থানীয় বাসিন্দা তাপস বেরা, সুশান্ত মাইতিরা বলেন, “প্রথমে ভাবি ৭-৮টা হাতি রয়েছে। তারাই ধানের গাদা থেকে ধান খাচ্ছে। বাড়ি ভাঙছে। তাদের তাড়ানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ভয় না পেয়ে ওরাই তেড়ে আসে। উল্টোদিকে ঘুরতেই আবার দেখি, সে দিকেও ৮-১০টা হাতি রয়েছে। পরে দেখি গোটা গ্রামেই ছড়িয়ে রয়েছে হাতির দল। ভয়ে আর কিছু করতে সাহস হয়নি। একে তো ধান নষ্ট, তার উপরে প্রাণের ভয়।” শুধু ধানই নয়, এখন মাঠে আলু রয়েছে। গ্রামে ঢোকা-বেরোনোর পথে সেই আলুও মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতিরা।
কিন্তু এ ভাবে তো চলতে পারে না। তাই হাতি তাড়ানোর জন্য বনকর্মীদের চাপ দেন স্থানীয় মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামাপদ বেরা, বাসন্তী বেরারা বলেন, “প্রতিদিনই বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সারের দাম বাড়ছে। কত কষ্ট করে চাষ করেছি। তার উপর ধানের দাম কম। মজুরি খরচ করে সেই ধান বাড়িতে এনেছি। তাও যদি হাতি খেয়ে শেষ করে তা হলে তো চরম বিপদে পড়তে হবে। তাই বন দফতরের কাছে দ্রুত হাতি তাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।” মেদিনীপুর ডিভিসনের ডিএফও আশিস সামন্ত জানান, হাতি তাড়ানোর অভিযান শুরু হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে হাতির দলকে লালগড় হয়ে দলমায় পাঠিয়ে দিতে। ক্ষয়ক্ষয়তি এড়াতে তাড়াতাড়ি হাতির দলকে দলমায় ফেরানোর জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.