সালকিয়ার প্রোমোটার গৌতম রায়ের খুনের ঘটনায় রহস্য ক্রমশ দানা বাঁধছে। তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক সূত্র। কিন্তু ঠিক কী কারণে এই খুন, তা নিয়ে এখন ধন্দে পুলিশ। তবে পুরনো শত্রুতার জেরে গৌতম খুন হতে পারেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান।
পুলিশ জানায়, প্রোমোটারিতে দীর্ঘ দিন যুক্ত গৌতমকে আগেও খুনের চেষ্টা হয়। গত ২৭ নভেম্বর রাতে স্থানীয় ঘোষালবাগান এলাকায় তাঁকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। তা জুতোয় লাগায় তিনি বেঁচে যান। প্রাণহানির আশঙ্কার কথা জানিয়ে মালিপাঁচঘরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গৌতম। পরিজনেরা পুলিশকে জানান, বছর আটেক আগেও দুষ্কৃতীদের বোমা-গুলির আঘাতে জখম হন গৌতম। আগের হামলার সঙ্গে বৃহস্পতিবারের ঘটনার কোনও যোগ আছে কি না, দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
পুলিশ জানায়, নিজের মোটরবাইক থাকলেও চালাতে জানতেন না গৌতম। স্থানীয় এক জন সেটি চালাতেন। তাঁর হাতে চোট লাগায় মঙ্গলবার থেকে বাবলু মণ্ডল বাইকটি চালাচ্ছিলেন। গৌতমের ফ্ল্যাটের সামনেই বাবলুর গ্যারাজ। বৃহস্পতিবারও তিনিই গৌতমকে হাওড়া আদালতে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
বাবলু বলেন, “তিন দিন ধরে শম্ভু হালদার লেন ধরেই গৌতমদাকে কোর্টে নিয়ে যাচ্ছিলাম। বৃহস্পতিবার বললাম, কাজ আছে, যেতে পারব না। ও বলে, ছেড়ে দিয়েই চলে আসতে।” বাবলু জানান, শম্ভু হালদার লেন থেকে অরবিন্দ রোডে ওঠার সময়েই গৌতম বাইক থামাতে বলেন। তার পরেই ‘তুই পালা’ বলেই উল্টো দিকে ছুটতে শুরু করেন। পিছনে ৮-১০ জন সশস্ত্র যুবক ধাওয়া করে। এর পরেই তিনি বাইক নিয়ে পালান বলে পুলিশকে জানান বাবলু। বাবলুর বিবরণ শুনে তদন্তকারীদের সামনে উঠে এসেছে কিছু প্রশ্ন। তা হল এক, দুষ্কৃতীরা কী ভাবে জানল তিন দিন ধরে ওই পথেই গৌতম আদালতে যাচ্ছেন? দুই, জনবহুল অরবিন্দ রোডে জটলা করে থাকা দুষ্কৃতীদের দূর থেকে চিনতে পেরেই বাইক থেকে নেমে ছুটতে শুরু করেন গৌতম। ওই দলে কী কেউ তাঁর পূর্ব পরিচিত ছিল? পাশাপাশি, খুনের পরে দুষ্কৃতীরা যে বাইলেনটি ধরে হেঁটে পালায়, তা নতুন লোকের জানা সম্ভব নয়। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ বাবলু ও গৌতমের ব্যবসার এক সময়ের অংশীদার গৌতম সিংহরায়-সহ আরও কয়েক জনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সদর) সুকেশকুমার জৈন বলেন, “একাধিক সূত্র মিলেছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ঠিক কী কারণে এই খুন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।” |