পুলিশকে ইট-পাটকেল, ধৃত ১৪
দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ‘হামলা’ হল হাওড়ার আমতার একটি কাগজকলে। বাধা দিতে গেলে পুলিশের দিকে ইট-পাথর ছোড়া হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের ‘শেল’ ফাটায়। ১৪ জনকে ধরা হয়। শুক্রবার বিকেলে পাত্রপোলের কাছের ওই কাগজকলের পাশে বামফ্রন্টের বিভিন্ন শরিকদলের কৃষক সংগঠনগুলি কাগজকলের ‘দূষণের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-সভা করছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, সভায় যাঁরা হাজির ছিলেন, তাঁদেরই একাংশ ‘গোলমাল’ পাকান। সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার অবশ্য বলেন, “ঘটনার সঙ্গে প্রতিবাদ-সভার সম্পর্ক নেই। আমাদের হেয় করার জন্য এটা বহিরাগত দুষ্কৃতীদের চক্রান্ত।” বহু চেষ্টা করেও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
পাত্রপোলের কাছেই শেরপুরে মাস ছ’য়েক আগে তৈরি হয়েছে একটি কাগজকল। এই কাগজকলের বর্জ্যে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে কারখানাটি পরিদর্শনও করা হয়। দূষণ রোধের বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও পর্ষদ কারখানা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। তারপরেও দূষণ কমেনি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।
দূষণের বিরুদ্ধে শুক্রবার বিকেলে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে বামফ্রন্টের চারটি শরিকদলের কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সভার শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়ারও কর্মসূচি ছিল বলে জেলা বামফ্রন্ট সূত্রের খবর। স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচির কথা পুলিশকে জানিয়েও দেওয়া হয়। সে কারণে কারখানার সামনে পুলিশও মোতায়েন করা হয়।
বিকেল ৩টে নাগাদ প্রতিবাদসভাটি শুরু হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে বামফ্রন্টের প্রচুর কর্মী-সমর্থক সভায় যোগ দিতে আসেন। সভা চলাকালীন মঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হয় মালিক পক্ষ না-থাকায় এ দিনের স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি বাতিল করা হল। এই ঘোষণার পরেই কয়েকশো মানুষ কারখানার গেটের দিকে ধেয়ে যান। সমাবেশের জমায়েত থেকেই হামলাকারীরা গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। কারখানায় তাঁরা ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কিন্তু পুলিশ সংখ্যায় অল্প থাকায় প্রচুর সংখ্যক হামলাকারীর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি তারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে পিছু হঠে। কিছু ক্ষণ করেই অবশ্য বিভিন্ন থানা থেকে আরও বাহিনী এসে যায়। কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়া হয়। ১৪ জনকে ধরা হয়। বাকিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। হামলা চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে জেলা বামফ্রন্ট। জেলা বামফ্রন্টের সভাপতি তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, “আমাদের প্রতিবাদ সভাকে ভণ্ডুল করতে একটা গণ্ডগোল পাকানো হবে এবং বোমাবাজি করা হবে বলে আমাদের কাছে খবর ছিল। সেটা বুঝতে পেরেই আমরা স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি বাতিল করি। তা ছাড়া, কর্তৃপক্ষও এ দিন ছিলেন না। আমাদের স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি বাতিল করার কথা ঘোষণা হতেই হঠকারী কাজটি করা হয়। বামফ্রন্টের কোনও কর্মী-সমর্থক এই কাজের সঙ্গে যুক্ত নন। আমাদের হেয় করার জন্যই এমনটা ঘটানো হয়েছে।” পুলিশের ভূমিকার সমালোচনাও করেন তিনি। বিপ্লববাবুর অভিযোগ, “পুলিশ প্রকৃত দোষীদের বদলে নিরীহ গ্রামবাসীদের ধরেছে।” জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের উপরে ব্যাপক ইটবৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে।” কাগজকলটির মালিকদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.