|
|
|
|
সংখ্যালঘু সংরক্ষণ |
বিরোধিতায় বিজেপি, দু’কুল রাখতে ব্যস্ত মুলায়ম-নীতীশরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সরকারি চাকরি এবং শিক্ষায় সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের ব্যাপারে কেন্দ্রের ঘোষণা ঘিরে পুরোদমে রাজনীতি শুরু হয়ে গেল।
গতকাল সংসদকে এড়িয়ে প্রশাসনিক নির্দেশে সরকারি চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের আওতায় সংখ্যালঘুদের জন্য সাড়ে চার শতাংশ
সংরক্ষণের প্রস্তাব অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সংখ্যালঘু ভোটকে টানতে কংগ্রেস এই মোক্ষম চাল দিল বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে পাল্টা রাজনীতি শুরু করেছে অন্য দলগুলোও।
কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির কাছে সিদ্ধান্তটি ‘শাপে বর’ই হয়েছে। কারণ, সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার প্রত্যাশা তাদের নেই। বরং বিজেপি নেতারা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের যতই বিরোধিতা করা যায়, ততই হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক আরও সংগঠিত হবে। সে কারণে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে রে-রে করে নেমে পড়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা, বিজেপির সংখ্যালঘু মুখ মুখতার আব্বাস নকভি বলেন, “মুসলিম ভোট টানতে কংগ্রেস যা করছে, তাতে বাকিদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হবে। ”
এনডিএ-এর শরিক জেডি (ইউ)-ও এর বিরোধিতা করছে। কিন্তু অন্য ভাবে। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিতে সংখ্যালঘু সংরক্ষণ করলে বিহারে যাদব ও কুর্মিরা অসন্তুষ্ট হবেন। নীতীশ কুমারের যেমন কুর্মি ভোটকে সুরক্ষিত রাখতে হবে, তেমনই সংখ্যালঘু ভোটের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। সে কারণে জেডি (ইউ) নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি বলেন, “কংগ্রেস আসলে হিন্দুত্বের শক্তিকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ দিল। এর ফলে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক ভারসাম্য ক্ষুণ্ণ হবে। লালকৃষ্ণ আডবাণীর অযোধ্যা রথযাত্রার সময় থেকেই কংগ্রেস এই কাজটি করে আসছে।”
উত্তরপ্রদেশে দলিত ভোট যেহেতু মায়াবতীর দখলে রয়েছে, তাই এ নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু যাদব ও সংখ্যালঘুএই দু’টিই মুলায়মের ভোটব্যাঙ্ক। অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ কমিয়ে সংখ্যালঘুদের দিকে পাল্লা ভারি হলে যাদবরা ক্ষুণ্ণ হবেন। ফলে দু’দিক সামাল দিতে মুলায়ম বিরোধিতা করতে চেয়েও কার্যত করতে পারছেন না। বরং তাঁর প্রস্তাব, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের মোট পরিমাপটাই বাড়িয়ে দেওয়া হোক।
জেডি (ইউ)-এর শরদ যাদবও সেই প্রস্তাব দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, সংরক্ষণের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি হবে না, সেটি সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা। ফলে সরকার আদালতের সঙ্গে পাঞ্জা কষে সংরক্ষণের পরিমাণ বাড়াক।
পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বাম সরকার ঠিক একই ভাবে সংরক্ষণের দাওয়াই দেওয়ায় তারা এখন এর বিরোধিতা করতে চাইছে না। তবে এই সিদ্ধান্তকে কংগ্রেসের ‘ভোট-রাজনীতি’ অ্যাখ্যা দিচ্ছে তারা।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট বলেন, “উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কংগ্রেস এই ‘প্রতীকী’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের রিপোর্টে মুসলিমদের জন্য দশ শতাংশ এবং অন্য সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। সিপিএম সেই সুপারিশ কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছে।” |
|
|
|
|
|