|
|
|
|
অভিযোগ মুখ্য বিচারকের |
আলো-জল এলাকা জুড়ে, খরচ দিতে হচ্ছে আদালতকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শিয়ালদহ আদালতের মাসিক বিদ্যুৎ খরচ ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
আদালতের বাইরের চায়ের দোকান, খাবারের দোকান, ফলের দোকান এমনকী সেলুন, সবই চলে আদালতের থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে। আদালতের জলেই চলে ওই সব দোকানপাট। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আদালতে কাজ হয়। কিন্তু আদালতের বিভিন্ন ঘরে আলো, পাখা চলে রাত দশটাতেও। এই অভিযোগ তুলেছেন উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য বিচারক স্বয়ং। তাঁর পক্ষে বাজেটে বরাদ্দ অর্থ দিয়ে এই ব্যয়ভার সামলানো সম্ভব নয় বলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলকে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি মুখ্য বিচারকের ওই অভিযোগপত্রকে মামলার আবেদন হিসেবে ধরে নিয়ে নিজেই একটি স্বতঃপ্রণোদিত জনস্বার্থের মামলা করেন। এ দিন শুনানি হয় মামলাটির। মুখ্য বিচারকের তরফে জানানো হয়, আদালতের কাজে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের খরচের তুলনায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অনেক বেশি। আদালতের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে হিটার জ্বলে, জলের পাম্প চলে দিন-রাত। ওই এলাকার অনেকে সেখানকার জল ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন। কাজের সময়ের পরে আদালতের বিদ্যুৎ ও জলের অপব্যবহার যাতে না হয়, দায়িত্বপ্রাপ্তেরা সে দিকে খেয়াল রাখেন না।
তাই প্রধান বিচারপতি এ দিন প্রশ্ন তোলেন, এই অপব্যবহার বন্ধের জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজ্য।
রাজ্যের অতিরিক্ত জিপি তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকারেরই ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকার নীরব থাকতে পারে না।” মুখ্য বিচারকের অভিযোগকে অত্যন্ত গুরুতর বলে বর্ণনা করেন তিনি। এ নিয়ে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দেবে, রাজ্য সরকার তা নিষ্ঠা সহকারে পালন করবে বলে জানান অতিরিক্ত জিপি।
এই মামলা যেহেতু স্বতঃপ্রণোদিত তাই কয়েক জন প্রবীণ আইনজীবীর বক্তব্য, শুধু আদালত কেন, বহু সরকারি ভবন থেকেই এই ভাবে বিদ্যুৎ ও জল বাইরের দোকানপাট ও মানুষেরা ব্যবহার করেন।
এই প্রসঙ্গে আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, কয়েক বছর আগে হাইকোর্ট, নগর দায়রা আদালত-সহ বিভিন্ন সরকারি ভবনে রাতে মাসিক বন্দোবস্তের ভিত্তিতে প্রচুর মানুষ শুতেন। অসামাজিক কাজকর্মও চলত সেখানে। নগর দায়রা আদালতের স্নানাগারে এক দিন সকালে একটি সদ্যোজাত শিশুও পাওয়া যায়। তা নিয়ে মামলা হয়েছিল। কয়েক দিন রাজ্য সরকার কঠোর ব্যবস্থাও নিয়েছিল। তার পর ফের সব আগের মতো হয়ে যায়।
শুনানির শেষে প্রধান বিচারতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে এই সব বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। ১৫ দিন পরে হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে সরকার এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে। |
|
|
 |
|
|