নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
চালকলগুলিতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করলে চেকে নয় নগদে চাষিদের টাকা দিতে হবে, চাষিদের অযথা হেনস্থা করা চলবে না, কুইন্টাল পিছু ১০-১২ কেজি ধান বাদ দিয়ে ওজন করা চলবে না। এরকম একাধিক দাবিতে রাস্তায় পর পর গরুরগাড়ি দাঁড় করিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন বেশকিছু চাষি। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুবরাজপুর পুরসভার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেখ কিছু চাষি থানার সামনে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।
এই অবরোধের জেরে দু’দিক থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ। শেষ পর্যন্ত দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দাসের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন চাষিরা। তবে যানচলাচল স্বাভাবিক হতে আরও ঘণ্টা খানেক সময় লাগে। |
চাষিদের অভিযোগ, বাধ্য হয়ে এ ভাবে প্রতিবাদ করতে হল। তা না হলে যে ভাবে দিন দিন সমস্যা বাড়ছিল এবং মৌখিক ভাবে প্রশাসনকে জানিয়েও ফল পাওয়া যাচ্ছিল না। এ দিন অবরোধে সামিল কৃষকদের মধ্যে গোপীনাথ গড়াই, নিখিল মণ্ডল, আশিস গড়াইদের অভিযোগ, “সরকার নির্ধারিত ধানের মূল্য ১০৮০ টাকা। ওই মূল্য পেতে যখনই আমরা কোনও চালকল মালিকের কাছে যাচ্ছি বেশ কিছু অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। প্রথমত কুইন্টাল পিছু ১০-১২ কেজি ধান বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত- বিভিন্ন আড়ত থেকে ট্রাক বা লরিতে করে যে সব ধান চালকলে বিক্রির জন্য আসছে তাদেরকেই প্রাধান্য দিয়ে প্রথমে সেই ধান কেনা হচ্ছে। এর ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করে চালকলে গিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। এতে সমস্যায় পড়ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা। কারণ, ধান বিক্রির টাকায় শ্রমিকের খরচ মেটানো ও সংসার চালানো দু’টোই করতে হবে।”
তাঁদের ক্ষোভ, “এ ভাবে ধান কেনার জন্য ৭৮০-৮০০ টাকা নগদে আড়তদারদেরকে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। তা হলে ধানের সহায়ক মূল্য নির্ধারণের মানে কী?” দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দত্ত বলেন, “জেলাশাসক বৈঠক করে কী ভাবে ধান কিনবে চালকল মালিকেরা সেটা জানিয়েছিলেন। সেখানে যদি কোনও সমস্যা তৈরি হয় বা চাষিদের কোনও অভিযোগ থাকে সেটা জেলাশাসককে জানানো হবে। তবে বিভিন্ন চালকলে একাধিকবার পরিদর্শন করে কোনও অভিযোগ আমাদের নজরে আসেনি। কোনও চালকল মালিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রশাসন অবশ্যই তা দেখবে।” |