|
|
|
|
মাটিতে উড়োজাহাজ দেখে রোমাঞ্চিত খুদেরা |
সুশান্ত বণিক • আসানসোল |
শীত পড়েছে জাঁকিয়ে। সঙ্গে উৎসবের আমেজ। রাত পোহালেই বড়দিনের উৎসবে মাততে প্রস্তুত শিল্পাঞ্চল। আলো-রঙের বাহারে সেজেছে শহর। সান্তাক্লজের মূর্তিতে ছেয়ে গিয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত।
আসানসোল মহকুমার দুই শিল্প শহর বার্নপুর ও চিত্তরঞ্জনও পিছিয়ে নেই। একটি ইস্পাত শিল্পের জন্য বিখ্যাত আর অন্যটির পরিচিতি রেল ইঞ্জিন তৈরিকে কেন্দ্র করে। উৎসবের মুহূর্তে এই দুই শহরের দু’টি বিনোদন পার্কে কয়েক দশক আগের স্মৃতি উসকে দিতে তৈরি ‘কুইন এয়ার ৬৫’ এবং ‘দেশবন্ধু ও অন্তিম সিতারা’। প্রথমটি আস্ত একটি উড়োজাহাজ। পরের দু’টি কয়লা চালিত রেল ইঞ্জিন। কয়েক বছর ধরে এগুলিই ছোট স্কুল পড়ুয়াদের খুব পছন্দের। এ বারও যেন সেই উৎসাহে বিন্দুমাত্র ভাটা না পড়ে, তার জন্য তৈরি দুই কারখানা কর্তৃপক্ষই। |
|
বার্নপুরের নেহরু পাকে ‘কুইন এয়ার ৬৫’। নিজস্ব চিত্র। |
বার্নপুরের ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টের নেহরু পার্কে স্থান পেয়েছে ‘কুইন এয়ার ৬৫’। এই উড়োজাহাজটিতে চড়ে নিজের কারখানা পরিদর্শনে যেতেন ইস্কো কারখানার প্রতিষ্ঠাতা বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। প্রায় ৭০ বছর আগে এই উড়োজাহাজটি তিনি আমেরিকা থেকে কিনেছিলেন। ১৯৯৯ সালে এটি শেষ বারের মতো আকাশে উড়েছিল। ইস্কোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার জানান, পুরনো স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই এটিকে বিনোদন পার্কে জায়গা দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ ও যে কোনও উৎসবে স্কুল পড়ুয়াদের কাছে বড় আকর্ষণ এই উড়োজাহাজ। পার্কে বেড়াতে গিয়ে উড়োজাহাজের সামনে দাঁড়িয়ে বিস্মিত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী লিজা গুপ্ত বলল, “আকাশে উড়তে দেখেছি। কিন্তু উড়োজাহাজ মাটিতে দেখে বিশ্বাস হচ্ছে না।” শুধু ছোটরাই নয়, উড়োজাহাজ ঘিরে বড়দেরও আগ্রহও কম নয়। ইস্কোর কর্মী অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ছোটবেলায় বার্নপুরের আকাশে অনেকদিন এটিকে উড়তে দেখেছি। এখন এর গায়ে হাত দিতে পেরে রোমাঞ্চিত হই।”
পিছিয়ে নেই চিত্তরঞ্জন রেল শহরের দেশবন্ধু পার্ক। পুরনো স্মৃতিকে মেলে ধরতে এই পার্কেও একাধিক ঐতিহ্যমণ্ডিত রেল ইঞ্জিন সাজিয়ে রেখেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। চিত্তরঞ্জনের কারখানায় তৈরি প্রথম কয়লা চালিত রেল ইঞ্জিনটি এখানে রাখা হয়েছে। ১৯৫০ সালে ইঞ্জিনটি তৈরি হয়। নাম দেওয়া হয় ‘দেশবন্ধু’। ১৯৭২ সালে দেশের শেষ কয়লা চালিত ইঞ্জিন ‘অন্তিম সিতারা’-ও স্থান পেয়েছে ওই পার্কে। কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ জানান, কারখানার পুরোনো ঐতিহ্যকে ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ। দেশবন্ধু পার্কের অপর আকর্ষণ ‘টয় ট্রেন’। রেল কারখানার তৈরি এই ট্রেনটি দিন কয়েক আগে বিকল হয়ে যাওয়ায় মন খারাপ ছোটদের। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সায়ন দেব বলে, “কয়লার ইঞ্জিন কী ভাবে চলে তা বইতে পড়েছি। সামনে থেকে দেখে আরও ভাল করে বুঝলাম। তবে টয় ট্রেনটা চললে আরও মজা পাব।” প্রস্তুতি প্রায় শেষ। স্মৃতির সলতে উস্কে এ বার অপেক্ষা শুধু বড়দিনের। |
|
|
|
|
|