জাতীয় সড়কের জন্য ব্যক্তিগত জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা হলে বাধা দেওয়া হবে বলে হুমকি দিল এসইউসি পরিচালিত সারা বাংলা কৃষিজমি বাস্তু ও জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির উত্তর দিনাজপুর জেলা শাখা। সম্প্রতি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জেলার ইটাহার থেকে পূর্ণিয়া মোড় পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু করেছেন। কয়েকটি এলাকায় পূর্ত দফতরের জমিতে মাটি ফেলার কাজ চলছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় রাস্তার দু’পাশে প্রায় আড়াইশো ফুট করে জমি অধিগ্রহণের জন্য মাপামাপি করছে। সেটা হলে এলাকার বহু বাড়ি, স্কুল, মাদ্রাসা, দোকানপাট ভাঙা পড়বে। সেটা তাঁরা কোনও মতেই হতে দেবেন না। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংগঠনের উত্তর দিনাজপুর জেলা শাখার কয়েকশো সদস্য রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোড় থেকে কর্ণজোড়া পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার বিক্ষোভ মিছিল করেন। এর পর সংগঠনের সদস্যরা প্রায় একঘন্টা কর্ণজোড়ায় অতিরিক্ত জেলাশাসকের (ভূমি) দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়। প্রশাসনিক আশ্বাসে বিকেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তথা ডালখোলা কলেজের অধ্যাপক মানস জানা বলেন, “জাতীয় সড়কের দু’ধারে পূর্ত দফতরের ১২০-২০০ ফুট করে অব্যবহৃত জমি রয়েছে। ওই জমি ব্যহবার করে সম্প্রসারণ হোক। ব্যক্তিগত জমি দেওয়া হবে না। কোনও ভাবে জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা হলে বাধা দেওয়া হবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রসন্নকুমার মন্ডল বলেন, “প্রশাসনের তরফে সংগঠনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে সরকারি নিয়মে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” কমিটির বক্তব্য, পুর্ণিয়া মোড় থেকে ঘোষপুকুর পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের ৭০ ফুট জমি নিয়ে কয়েক বছর আগে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। অথচ ইটাহার থেকে পূর্ণিয়া মোড় পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজে নেমে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দু’ধারের ২০০ থেকে ২৫০ ফুট পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। সেই জন্যই বহু ব্যক্তিগত, বাস্তু ও কৃষিজমি দখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কমিটির বক্তব্য, যেভাবে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ হয়েছে সেটা মেনেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে সম্প্রসারণ করতে হবে। কমিটির জেলা আহ্বায়ক মারফত আলি বলেন, “আমরাও চাই জেলার উন্নয়নের স্বার্থে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করা হোক। তবে তা যেন অব্যবহৃত সরকারি জমিতেই করা হয়। যদি ব্যক্তিগত জমি অধিগ্রহণ করতেই হয় তবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সরকারি নিয়মে মালিকদের জমির দাম দিতে হবে। পাশাপাশি, পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করতে হবে।” |