জমি অধিগ্রহণের জটিলতাই তিস্তা সেচ প্রকল্পের অগ্রগতির পথে মূল বাধা বলে দাবি করলেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তরপর্বে তিনি বলেন, “কিছু জায়গায় দশ বছর বা আরও বেশি আগে অধিগৃহীত খাস জমিতে নতুন করে পাট্টা বিলি হয়েছে। ওই পাট্টাদারেরা জমি ছাড়তে চাইছেন না বলেই প্রকল্পের কাজে বিলম্ব ঘটছে।”
এ দিন আরএসপি বিধায়ক নর্মদাচন্দ্র রায় সেচমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজে জমি-জটই মূল বাধা কি না বা জমি পেতে সমস্যা হচ্ছে কি না। জবাবে সেচমন্ত্রী বলেন, “অনেক জায়গায় অধিগৃহীত জমি স্থানীয় লোক দখল করে রেখেছে। বহু ক্ষেত্রে জবরদখলকারীরাই নিজেদের ‘প্রকৃত মালিক’ বলে দাবি করে জমিহারা শংসাপত্র (ল্যান্ডলুজার সার্টিফিকেট) চাইছে। ক্ষতিপূরণ সঠিক লোককে দেওয়া হয়নি দাবি করে নতুন করে ক্ষতিপূরণও চাইছে জবরদখলকারীরা।” জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজ সম্পর্কেও জানতে চান নর্মদাবাবু। সেচমন্ত্রী জানান, জমির মালিক বাজারদর অনুযায়ী জমির দাম, ৩০% সান্ত্বনা মুল্য, জমি অধিগ্রহণের নোটিসের দিন থেকে ‘অ্যাওয়ার্ড’ ঘোষণা পর্যন্ত ১২ শতাংশ হারে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন। এ ছাড়া ঘরবাড়ি ও অন্য সম্পত্তি তথা ফসল, গাছপালা ইত্যাদির জন্যও নির্ধারিত হারে ক্ষতিপূরণ মিলবে।
মানসবাবু জানান, নথিভুক্ত বর্গাদারেরা জমির মালিকদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের ৫০ শতাংশ পৃথক ভাবে পাবেন। নথিভুক্ত নন, এমন বর্গাদারেরা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে প্রমাণপত্র দেখিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। কোনও কারণে নথিভুক্ত না হতে পারলে যথাযথ শংসাপত্র ও প্রমাণপত্র দেখিয়ে কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে তাঁরা জমির মালিকের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের ২৫ শতাংশ পৃথক ভাবে পাবেন। এ ছাড়া এই দু’ধরনের বর্গাদারেরাই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নির্ধারিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরির হার অনুযায়ী ৩৪০ দিনের এককালীন অর্থ পাবেন।
সেচমন্ত্রী বলেন, “অধিগ্রহণের আওতায় বাড়িঘর পড়লে জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি বদলের জন্য এককালীন ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। বিপিএল পরিবারের ঘরবাড়ি অধিগ্রহণ হলে ইন্দিরা আবাস যোজনায় নির্ধারিত হারে এককালীন অর্থ সাহায্যও করা হবে।” মানসবাবু আরও জানান, এ বার তিস্তার বাঁ-দিকে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের জল পৌঁছে দেবে সরকার। তাঁর দাবি, “গত বছর তিস্তা থেকে সেচের জল ৩২০০০ হেক্টর জমিতে পৌছনো হয়েছিল। এ বার তা ৪৬০০০ হেক্টর হবে।” |